‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
বিশিষ্ট এ সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্টের বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী। মায়ের নাম মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন। গাফফার চৌধুরীর তিন ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে সবার বড় হোসেন রেজা চৌধুরী। ছোট ভাইয়ের নাম আলী রেজা চৌধুরী। বোনেরা হলেন মানিক বিবি, লাইলী খাতুন, সালেহা খাতুন, ফজিলা বেগম ও মাসুমা বেগম।
বাংলাদেশের শীর্ষ দৈনিকগুলোয় প্রকাশিত আবদুল গাফফার চৌধুরীর রাজনীতি, সমসাময়িক ঘটনা ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নিয়ে লেখা কলাম অত্যন্ত জনপ্রিয়।
তার লেখা বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ভয়ংকরের হাতছানি, সম্রাটের ছবি, ডানপিটে শওকত, চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, পলাশী থেকে ধানমন্ডি, শেষ রজনীর চাঁদ এবং কৃষ্ণপক্ষ।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরেও অমর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে লেখা তার ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির জন্য।
জীবদ্দশায় বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার ভূষিত হন এ লেখক। এ ছাড়া সংহতি আজীবন সম্মাননা পদক-২০০৮ (লন্ডন), স্বাধীনতা পদক ২০০৯, মানিক মিয়া পদক ২০০৯, যুক্তরাজ্যের ফ্রিডম অব বারা (টাওয়ার হ্যামলেটস) উপাধি, সংহতি আয়োজিত প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সংবধর্না (ঢাকা ২০০৯) পেয়েছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।
গত কিছুদিন ধরেই নানা ধরণের শারীরিক অসুস্থতার জন্য বার বার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছিল। ২০১১ সালে স্ত্রী বিয়োগের পর তিনি একাই থাকতেন। শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সেবা কর্মীরাই বাড়ি এসে তার দেখাশোনা করতেন।
উনিশশো চুয়াত্তর সালে তিনি অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে আসেন। এরপর বাকী জীবন তিনি লন্ডনেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী-স্পিকারসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন মন্ত্রী, নেতাকর্মীরা শোক প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর সময় বরেণ্য এ সাংবাদিকের বয়স হয়েছিল ৮৬।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ