ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষাক্ষেত্রে আমার যতটুকু করার করে যাবো: পরিকল্পনামন্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৯:২৩

শিক্ষাক্ষেত্রে যতটুকু করার ততটুকু করে যাবেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেন, শিক্ষার বাজেট নিয়ে আমি স্বীকার করি এক বাক্যে শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বাড়াতে হবে। যদিও আমাদের শিক্ষার হার কম। আমাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা উচিত শিক্ষা খাতে।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে গণস্বাক্ষরতা অভিযান, এডুকেশন ওয়াচ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার বাজেট: বাজেটের শিক্ষা এই প্রতিপাদ্য নিয়ে‘শিক্ষা ও মানবসম্পদ: কোথায় আছি আমরা’ একটি আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি একজন পরিসংখ্যান সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করি। সারাদেশের তথ্য সংগ্রহ করি। তারপর সেসব তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা করতে চেষ্টা করি। এই আলোচনা সভায় সবাই একটি কথা বলেছেন, কোনো কাজে পরিকল্পনা হলে সেটি বাস্তবায়ন হয় না কেন? আসলে পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরও কিছু বিষয়াদি আছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে আমি কথা দিচ্ছি, আমার যেটুকু করার আমি করে যাবো।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষায় দেশের মান অনেক উন্নত হয়েছে। উপবৃত্তির যে টাকা দেয়া হয় আসলেই সেই টাকা বাড়ানো উচিত। আমরা সবাইকে কেন উপবৃত্তি দিব। স্কুলের একটি গ্রুপ আছে তাদেরকে কেন আমরা উপবৃত্তি দিবো। যাদের পরিবার গরিব ও পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তাদের আমরা উপবৃত্তি দিবো।

মন্ত্রী বলেন, সবার কাছে আমার অনুরোধ, এখানে গণমাধ্যম আছে, সুশিল সমাজ আজে, সব নিয়ে কথা হয় সংবিধান নিয়ে কেন কথা হয় না? আমার মনে হয় সংবিধান নিয়েও কথা বলা উচিত।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি। অনেক মেয়েদেরই এসময়ে বিয়ে হয়ে গেছে। কোভিড-১৯ শিক্ষা খাতে অনেক ক্ষতি করেছে। আমাদের এ ক্ষতি কাটাতে এই উদ্যোগ অনেক কাজে দেবে।

সিপিডি রিসার্চ সহযোগী মুনতাসির কামাল বলেন, শিক্ষাকে সব জায়গায় একটা প্রায়োরিটি সেক্টর হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে বাজেটের খরচের দিকে তাকালে দেখা যায় তা সাংঘর্ষিক। বাজেট যদি বাড়ানো না হয় তাহলে শিক্ষায় উন্নয়ন হবে কীভাবে। আমরা গত বছরগুলো থেকে যদি দেখি তাহলে দিনদিন শিক্ষায় বাজেট বাড়ার চেয়ে কমছে।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া হারের দিকে তাকালে শঙ্কা থেকে যায়। দুইবছর যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এটা অনেকটাই ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। আসছে বাজেটে শিক্ষার ঝুঁকি কাটাতে যেমন ভূমিকা রাখতে হবে তেমনি সেগুলো কাটিয়ে উঠার ওপরও বিশেষ নজর দিতে হবে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের উপ-প্রতিনিধি ভিরা মেনডোনকা বলেন, বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত আধুনিক রাষ্ট্র। তবে এ দেশের শিক্ষার মান ও ব্যবস্থা উন্নত বিশ্ব থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। এখনো এ দেশের গ্রামীণ পর্যায়ে শিক্ষার মান এতটা উন্নত নয়। এর ফলে এই দেশে অনেক মেধাবী থাকা সত্ত্বেও তারা সেভাবে তৈরি হতে পারছে না। তাই শিক্ষায় বাজেট বাড়িয়ে তাদের সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া গেলে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়া সম্ভব। আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে এখনকার শিশু। তাই তাদের যত্নে সবকিছু করা উচিত।

সিলেট থেকে আসা শিক্ষার্থী লালন বলেন, আমি সিলেট চা-বাগানে কাজ করি। বাবা নেই মা চা-বাগানে কাজ করে। পরিবার গরিব হওয়া পড়াশুনার খরচ চালাতেন মা। তাই আমি চা-বাগানে কাজ করে পড়াশুনার খরচ নিজেই চালাই। সরকার যদি শিক্ষাখাতে বাজেট বৃদ্ধি করে আমাদের সাহায্য করেন তাহলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়।

তানজিমা আক্তার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি হাজারিবাগ বউ বাজার বস্তি থেকে এসেছি। আমার পড়াশুনার অনেক ইচ্ছা ছিল। পরিবারের আর্থিক সমস্যা থাকায় আমার বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তবুও পড়াশুনা করতে চাই। সরকার যদি আমাদের দিকে একটু তাকায় তাহলে আমার মতো আরও ইচ্ছে কোরবানি দেয়া অনেক সম্ভাবনাময় জীবন পড়াশুনা করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

উক্ত আলোচনা সভায় রাশেদা কে চৌধূরীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডা. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, এডুকেশন পলিসি ২০১০ ফরমুলেশন কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল কাজি ফারুক আহমেদ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশন হান্স লেমব্রেছট, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ইনচার্জ এইচ ই জাবেদ প্যাটেল, কমিটি অন গভর্নমেন্ট অ্যাসুরেন্স বাংলাদেশ সংসদের সদস্য এরোমা দত্ত এমপি।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ