মহামারি করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু যখন প্রতিনিয়ত রেকর্ড গড়ছে ঠিক তখনই আরেক বিপদ এসে হাজির হয়েছে ঢাকাবাসীর সামনে। দেখা দিয়েছে এডিস মশার উৎপাত। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। কিটতত্ববিদরা আশঙ্কা করছেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
তবে প্রত্যেক বছরই মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা মুখে পড়ছেন মেয়ররা। নির্বাচনের আগে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেলেন মশা নিধন। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট বছর বছর বাড়লেও মশা কমছে কোনোভাবেই। প্রতিবছরই মশার উপদ্রব আগের চেয়ে আরও বাড়ছে। রাতে তো বটেই, দিনেও মশার যন্ত্রণায় মানুষ অতিষ্ঠ।
রাজধানীর দুই সিটিতে মশক নিধনে অর্থের বরাদ্দ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতিবছর বরাদ্দ বেড়েছে। বড় বরাদ্ধ থাকলেও প্রতিবছরই মশা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে সিটি করপোরেশনকে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য ১১০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে মশক নিধনে দুই সিটির বাজেট ছিল ১১২ কোটি টাকা। এরমধ্যে ব্যয় করা হয়েছে ৯৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে জানা গেছে, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। খরচের মধ্যে রয়েছে- মশার ওষুধ বাবদ ৩০ কোটি, আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কারে ১ কোটি ৫০ লাখ, ফগার ও স্প্রে মেশিন পরিবহণ খাতে ৩ কোটি, বিশেষ কর্মসূচিতে ২ কোটি, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণে ১২ কোটি টাকা ও চিরুনি অভিযানে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি টাকা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলছে, মশা নিয়ন্ত্রণ খাতে ২০২০-২১ অর্থবছর বরাদ্দ ছিল ৩৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি মশক নিধন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এরমধ্যে খরচ হয়েছে ৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। খরচের মধ্যে রয়েছে মশার ওষুধ ক্রয় ৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জলাশয় পরিষ্কার ও ব্যবস্থাপনায় ৫০ লাখ টাকা, ফগার ও স্প্রে মেশিন পরিবহণে খরচ ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এদিকে মশা নিয়ন্ত্রণ খাতে বিগত অর্থবছরগুলো বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিএসসিসি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, তবে ওই বছর এডিস মশার ব্যাপক উপদ্রব বাড়লে বরাদ্দ বাড়িয়ে খরচ করে ১৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা করা হয়, যদিও ব্যয় হয় ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট ছিল ২৬ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যয় হয় ১৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট বাড়িয়ে ৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা করা হয়, এর মধ্যে ব্যয় হয় ২৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ