পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার পশু কোরবানি করা হয়েছে। যার মধ্যে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ, ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৭১৫টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
শনিবার (২৪ জুলাই) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ঢাকা বিভাগে নয় লাখ ৭৩ হাজার ৮৩৩টি গরু-মহিষ, ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৩৬৩টিসহ মোট ২২ লাখ ৩৯ হাজার ২৫২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ লাখ ৭১ হাজার ২৩১টি গরু-মহিষ, আট লাখ ২৮ হাজার ৮৬টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ২০১টিসহ মোট ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫১৮টি, রাজশাহী বিভাগে ছয় লাখ ১৬ হাজার ৭৩৩টি গরু-মহিষ, ১২ লাখ ১৬ হাজার ২৮৩টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ১২৯টিসহ মোট ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৪৫টি, খুলনা বিভাগে দুই লাখ ৩৯ হাজার ১৪৭টি গরু-মহিষ, ছয় লাখ ১৮ হাজার ৪৪৩টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ১১টিসহ মোট আট লাখ ৫৭ হাজার ৬০১টি গবাদিপশু কোরবানি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া বরিশাল বিভাগে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৬২১টি গরু-মহিষ, এক লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৮টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট চার লাখ ৬১ হাজার ৯৭৯টি, সিলেট বিভাগে দুই লাখ নয় হাজার ৫৬৯টি গরু-মহিষ, এক লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৮টিসহ মোট চার লাখ আট হাজার ৯৪১টি, রংপুর বিভাগে চার লাখ ৯৬ হাজার ২২০টি গরু-মহিষ, পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৯টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ১০ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৯টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে এক লাখ ৮০ হাজার ৩২৫টি গরু-মহিষ, এক লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য তিনটিসহ মোট তিন লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৭টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার এ বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগসহ অন্যান্য দফতর-সংস্থা, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ অন্যান্য বেসরকারি সংগঠন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গবাদিপশুর ডিজিটাল হাট পরিচালনা করে। যার প্রেক্ষিতে এ বছর অনলাইনে মোট তিন লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯টি গবাদিপশু বিক্রয় হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা।
গত বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল ৮৬ হাজার ৮৭৪টি, যার আর্থিক মূল্য ছিল ৫৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৮২৯ টাকা। এ বছর গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি গবাদিপশু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রয় হয়েছে। আগামী বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরিসর আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
করোনা মহামারির মধ্যেও গবাদিপশু উৎপাদন, কোরবানির পশু প্রস্তুতকরণ, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা ও খামারিদের উদ্বুদ্ধকরণ, পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল সেবা প্রদানসহ সুষ্ঠুভাবে কোরবানির সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ।
একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রাণিসম্পদ খাতের খামারি, উদ্যোক্তা, ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনসহ কোরবানির সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল সরকারি-বেসরকারি দফতর-সংস্থা ও সংগঠনকেও ধন্যবাদ জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও সচিব।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছরের তথ্য অনুযায়ী ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার গরু-মহিষ, ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং অন্যান্য চার হাজার ৭৬৫ পশুসহ মোট এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু ছিল।
২০২০ সালের এর সংখ্যা ছিল এক কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে প্রায় ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি পশু কোরবানি করা হয়েছিল।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ