‘আমার একমাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়া থাকে। আমি আমার বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়ে থাকি আমার মনে হয় না যে এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে যে আমি মারা গেছি। আমরা সবকিছুই করি ছেলে-মেয়ে স্ত্রী-পরিবারের জন্য। গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কি কষ্ট, যারা একা থাকে তারাই এই কষ্ট বুঝে।’ এভাবেই নিজের মাথায় নিজে গুলি চালানোর আগে লাইভে কথাগুলো বলেছিলেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী মহসিন খান (৫৮)। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় ওই ব্যবসায়ী ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেন।
এ সময় লাইভের এসে তিনি বারবার পরিবার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে প্রতারিত হওয়ার কথা বলেছেন।
লাইভে তিনি বলেন, ‘৩০ জানুয়ারি আমার খালা মারা যান। খালার একমাত্র ছেলে আমেরিকা থাকে। মার মৃত্যুতে সে আসেনি। আজ (বুধবার) আরেক খালা মারা গেল। তার ৩ ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, আরেক ছেলে আমেরিকায়। এক ছেলে আসতে পারেনি তবে বাকি ৩ জন দাফন কাজ করেছে।’
‘পৃথিবীতে আপনি আপনার। ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী কেউ আপনার না। আজ আপনি আপনার ফ্যামিলিকে যেভাবে মেনটেইন করেন কাল সেভাবে না করলে পরিবারের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে। তারা কেন বুঝে না যে একজন যুবককালে যে আয় করে বয়স হলে তেমন পরিশ্রম করতে পারে না। আয়ও কমে যায়। এসব বিষয় নিয়ে আমি অনেকদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। জীবনে প্রতারিত হতে হতে আমি শেষ। আমার বাবা পর্যন্ত আমাকে সম্পদ বুঝিয়ে দেয়নি। যতটুকু করেছি নিজের বলে করেছি। তবে কিছুদিন ধরে জীবনের প্রতি এতোটাই বিতৃষ্ণা এসে গেছে এখন আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে না।’
‘আমি জানি আমি যদি আত্মহত্যা না করি, এই ঘরে আত্মহত্যা করি, মরে পরেও থাকি তাহলে কেউ জানবেও না। হয়তো অনেকদিন পর জানবে। আমার আত্মীয় যারা দেখছেন তাদের বলতে চাই, আপনারা আমাদের ক্ষমা করে দেবেন।’
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ