আট বছর আগে মামলা, অভিযোগ গঠনেরও প্রায় পাঁচ বছর হতে চলল; তবুও সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি। এর মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর তারিখ পিছিয়েছে ২৫ বারের মত। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটিতে আগামী ৫ মে আবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রয়েছে।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় মামলা হয়েছে তিনটি। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা। একটি হয়েছে ইমরাত নির্মাণ আইনে। ভবনের নকশা-সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করা হয়। তবে একটি মামলারও বিচার শেষ হয়নি।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আসামিদের মধ্যে কেবল সোহেল রানা কারাগারে। ৩২ জন জামিনে আছেন, পলাতক ৬ জন। ২ আসামি মারা গেছেন।
সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আট আসামি উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেন। পরে ছয়জন আসামির পক্ষে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। তবে দুজন আসামির পক্ষে স্থগিতাদেশ বহাল থাকায় মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহ এবং তৎকালীন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খানের পক্ষে স্থগিতাদেশ এখনো বহাল আছে। যে কারণে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে মামলাটি যাতে সচল হয়, সে ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে রানা প্লাজা নির্মাণের অভিযোগে মামলাটি করেছিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই বছরের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অভিযোগ গঠন করেন। তবে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি আনোয়ারুল কবীর বলেন, এ মামলায়ও সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহর পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। আর ভবনের নকশা–সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম চলছে ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে। এই মামলায় আসামি সোহেল রানার আইনজীবী ফারুক আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ