ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অগ্নিঝুঁকিতে ৪২১ হাসপাতাল

প্রকাশনার সময়: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:০৫
সংগৃহীত ছবি

রাজধানী ও আশপাশের এলাকার অন্তত ৪২১টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ১৭৩টি বা ৪০ দশমিক শূন্য চার শতাংশকে বলা হচ্ছে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আগুন নেভানোর জন্য সেখানে নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সরঞ্জাম। এই তালিকায় জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যেমন আছে, তেমনি আছে বেসরকারি অনেক নামি-দামি হাসপাতাল।

ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে করা ওই তালিকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালসহ ২৪৮টি প্রতিষ্ঠানকে অগ্নিদুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৪৩২টি হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসিইউতে গত ১৭ মার্চ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেখানে থাকা ১৪ রোগীকে স্থানান্তরের পর তিনজনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালটির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এরপর স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় চলে আসে।

অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক (বর্তমানে জাতীয় শিল্প স্বাস্থ্য সেফটি কাউন্সিলের সদস্য) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘হাসপাতালে আগুন লাগলে রোগীরা একা বের হতে পারেন না। তাদের উদ্ধার করতে হয়। এ জন্য হাসপাতালের অবকাঠামো এমন হতে হয় যেন আগুন ছড়াতে না পারে। আগুন লাগলে রোগীদের প্রাথমিকভাবে হাসপাতালের নিরাপদ স্থান এবং পরে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। এ কারণে হাসপাতালের উদ্ধার তৎপরতার প্রশিক্ষণ আলাদা। আইসিইউতে কোনো ফায়ার অ্যালার্ম বাজবে না, শুধু লাইট অ্যালার্ম থাকবে। নইলে সংককটাপন্ন রোগী তো আতঙ্কেই মারা যাবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঢামেক হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের সরিয়ে নেয়ার জন্য সাধারণত অন্য একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা থাকে। হাসপাতালে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যারা কাজ করেন তাদের ডিউটি রোস্টার থাকবে। সাধারণত বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে আগুন লাগে বলে ছয় মাস অন্তর সেগুলো পরীক্ষা করতে হবে। ঢামেকে অগ্নিকাণ্ডের সময় হাসপাতালের কর্মীরা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। এর অর্থ তারা প্রশিক্ষিত ছিলেন না। অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের হয়তো প্রস্তুতি ছিল না, পরিকল্পনা ছিল না। এসব বিষয়ে এখনই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। কারোর গাফিলতি থাকলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’

শর্ত মানেনি বেশিরভাগ হাসপাতাল : ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, অগ্নি-প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩ এবং ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০০৬ অনুসরণ না করে তৈরি ভবনগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আইনে অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বেশ কিছু শর্ত পূরণের কথা বলা হয়েছে। তবে ঢাকার বেশিরভাগ হাসপাতালেই সেসব মানা হয়নি। সরকারি হাসপাতালগুলোয় অবকাঠামোগত দিকটি মোটামুটি ভালো হলেও অগ্নিনিরাপত্তা সুবিধা নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে ঢামেক হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ ও শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করা যায়। যেসব হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক তাদের খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং যাদের আংশিক আছে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পরিদর্শন করা ৪৩২টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১১টিতে সন্তোষজনক চিত্র পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক গত ২৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন।

সেখানে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকা মহানগরীর হাসপাতালসমূহে অগ্নিকাণ্ডের ফলে স্বাস্থ্যসেবা প্রত্যাশী মানুষের প্রাণহানি, ভবনসহ সম্পদ ও সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিস ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহ সরেজমিন পরিদর্শনকালে বেশিরভাগের অগ্নিপ্রতিরোধ ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়।’

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালগুলোয় প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম সংযুক্ত করতে হবে। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৯ সালে বছরব্যাপী হাসপাতাল ভবনগুলো পরিদর্শনের পর ২০২০ সালে এই তালিকা তৈরি করা হয়। এখন পর্যন্ত এটিই সর্বশেষ তালিকা। কারণ গত বছর পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করলেও করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে পরে তা স্থগিত করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ওয়্যারহাউস) দিনমনি শর্মা বলেন, পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের সাড়া মেলেনি। ভবনগুলো আগের মতোই অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে।

ঝুঁকিতে যেসব প্রতিষ্ঠান: খুবই ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে— তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইএনটি, মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফার্মগেটের আল রাজী হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গুলশান-২ নম্বরের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মাতুয়াইল মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, একই এলাকার মেডিনোভা হাসপাতাল অ্যান্ড ডিজি ল্যাব, সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি)।

ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছে— ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল (শাহবাগ ও সেগুনবাগিচা), বিএসএমএমইউ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল (নয়া পল্টন, কাকরাইল ও মগবাজার), মগবাজারের আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইস্কাটন গার্ডেন রোডে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহাখালীর আইসিডিডিআরবি, কল্যাণপুরে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিরপুর-১৪ নম্বরে আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল, পুরান ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কলাবাগানে স্কয়ার হসপিটাল লিমিটেড, ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতাল, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল, ল্যাব এইড কার্ডিওলজি হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল, গ্রীনলাইফ হসপিটাল, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেরেবাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ এলাকার প্রায় সব সরকারি হাসপাতাল।

এক্সটিংগুইশারের মেয়াদ নেই: ঢাকার বড় দুটি সরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বলতে রয়েছে কিছু ফায়ার এক্সটিংগুইশার। সেগুলোও নিয়মিত পরীক্ষা করা হয় না। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, এক্সটিংগুইশারগুলোর কোনোটির মেয়াদ সম্প্রতি আবার কোনোটির বছরখানেক আগে শেষ হয়েছে। নিচতলায় ওয়ার্ড সর্দারের কক্ষ ও নামাজের স্থানের পাশে থাকা চারটি এক্সটিংগুইশারের মেয়াদ শেষ হয় গত ১৭ মার্চ। সেগুলোর গায়ে ১৮ মার্চ নিরীক্ষার একটি কার্ড রয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিন নিরীক্ষা করা হয়েছে মর্মে স্বাক্ষর করা কার্ড কোনো অর্থ বহন করে না। নির্ধারিত সময়ের পর সিলিন্ডারে নতুন করে উপাদান ভরতে হবে। অথবা আগের উপাদান ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় থাকলে নতুন করে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ লিখতে হবে।

হাসপাতালের নিচতলায় প্যাথলজি বিভাগের পাশেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের মজুদ। কোনো কারণে আগুনের সূত্রপাত হলে তা যদি অক্সিজেনের সংস্পর্শে যায়, তাহলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ এখানকার এক্সটিংগুইশারটিও মেয়াদোত্তীর্ণ। আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহারের জন্য প্যাথলজি ও জরুরি বিভাগের সামনে তিনটি বালতিতে বালু ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে এসব বালতিতে থুতু, কফ, পানের পিক, সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশসহ নানা আবর্জনা ফেলায় তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে।

সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের পর ঢামেক হাসপাতালে কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেল। পুরনো ভবনের নিচতলায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নতুন করে ফায়ার এক্সটিংগুইশার ঝোলানো হয়েছে। গত ২৩ মার্চ এগুলো রিফিল করা হয়েছে, মেয়াদ এক বছর। কিছুদিন আগেও বেশিরভাগ ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। তবে আয়োজন সব নিচতলাতেই। ওপরের তলাগুলোয় কোনো অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের দেখা মিলল না। এদিক থেকে ভালো চিত্র হাসপাতালের নতুন ভবনের। সব তলাতেই কম বেশি ফায়ার এক্সটিংগুইশার রয়েছে। তবে সেগুলোর বেশ কিছুর মেয়াদ চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে। আবার তৃতীয় তলায় পোস্ট সিসিইউয়ের সামনে ‘অগ্নিনির্বাপক’ লেখা ও হ্যাঙ্গার রয়েছে। তবে নেই কোনো এক্সটিংগুইশার।

এই দুই হাসপাতালে কোনো ফায়ার সেফটি ও ইভাকুয়েশন নজরে আসেনি। অগ্নিদুর্ঘটনায় ক্ষতি কমাতে এগুলো থাকা জরুরি বলে মনে করে ফায়ার সার্ভিস।

ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে : ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক নয়া শতাব্দীকে বলেন, আগের ভবনগুলো বিল্ডিং কোড অনুযায়ী তৈরি না হওয়ায় অবকাঠামোগত কিছু ত্রুটি রয়েছে। সীমাবদ্ধতা অনেক। ফায়ার সার্ভিস বলছে— নির্দিষ্ট আয়তনের পানির রিজার্ভার রাখতে হবে। আমাদের তেমন জায়গা নেই। তবে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত স্থানে ফায়ার এক্সটিংগুইশার স্থাপন করা হচ্ছে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। যতদূর সম্ভব হাসপাতালকে ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ ঘটনায় পুড়ে যাওয়া আইসিইউ পুননির্মাণের ক্ষেত্রে বাজেটের ১৫ শতাংশই রাখা হচ্ছে শুধু অগ্নিকান্ড প্রতিরোধের জন্য। তারপরও পুরোপুরি নয়, হয়তো ৭০ ভাগ নিরাপদ হবে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, হাসপাতাল ভবনের সার্বিক দায়িত্ব গণপূর্ত অধিদফতরের। অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা করে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ