ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
চতুর্থ ধাপের নির্বাচন

সংঘর্ষ-সহিংসতায় রাতে প্রাণ গেল ৩ জনের 

প্রকাশনার সময়: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:৫২
দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ। ছবি: খাতামধুপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী

দেশে চলমান দশম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে রোববার। নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, হামলা, ব্যাপক জালভোট প্রদান এবং কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে নির্বাচন তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এ ধাপের নির্বাচনে গুলিতে ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী ও সিলেট জেলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।

সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বৈটিকর বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷

এ ঘটনায় আহত এক সাইকেল ম্যাকানিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সাইকেল ম্যাকানিকের নাম আব্দুস সালাম (৪০)। তিনি লক্ষ্মীপাশা ইউপির রামপা দক্ষিণ ভাগ এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার গোলাপগঞ্জের ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফলাফলকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী এমরান হোসেনের লোকজন বৈটিকর বাজারে এসে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ এসে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে এমরান হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ টিয়ার সেল ও গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সংঘর্ষ চলাকালে বৈটিকর বাজারের একটি রিকশার গ্যারেজের মেকানিক আবদুস সালাম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সালামের বুক ও পেটে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ এবং এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে হামিদুল ইসলাম (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। রোববার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার রুহিয়া থানার রাজাগাঁও ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামিদুল ইসলাম রাজাগাঁও ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের মৃত তছির উদ্দীনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার রাজাগাঁও ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসাননগর কাদেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা ভোটকেন্দ্রের ফলাফলকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার দিকে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। আহত হন আরও পাঁচজন।

রুহিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্ত রঞ্জন বলেন, ঘটনাস্থলেই একজন মারা গেছেন। প্রশাসনের লোকজন সেখানে গেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

পটুয়াখালী (রাঙ্গাবালী)

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবদুল খালেক (৪৫) নামে এক মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যার পর চরমন্তাজ ইউনিয়নে নয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত ব্যক্তি মেম্বার প্রার্থী জিয়ার সমর্থক। নির্বাচন পরবর্তী ভোট গণনা নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক মেম্বার প্রার্থীর কর্মীসমর্থকদের মধ্যে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, রোববার বিকালে নয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ শেষে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য প্রার্থী টিউবওয়েল প্রতীকের আলমগীর হোসেন জয়ী ঘোষণা করা হয়। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্রার্থী মো. জিয়াউর রহমানের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ওই রেজাল্ট ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড। একপর্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি ছোড়ে। এ সময় খালেক গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিলে গ্রাম্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত খালেক পরাজিত প্রার্থী জিয়াউরের সমর্থক।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ