রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতাসহ দশজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। যারা দিনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকতেন এবং রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করতেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকার কাঞ্চনব্রিজ এলাকা থেকে মাইক্রোবাসসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি শর্টগান, একটি পাইপগান, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও নগদ ৩১ হাজার টাকা এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- হিটু মিয়া (৪০), ফরহাদ আলী (৫৮), লিটন শেখ (৩৮), রিপন মৃধা ওরফে জামাই রিপন (২৯), স্বপন মিয়া (২৭), জাকির ব্যাপারী (২৯), জলিল খাঁন (৪০), শ্রী লক্ষণ চন্দ্র দাস (২৬), শ্রী অজিত চন্দ্র সূত্রধর (২৭) ও ইখতিয়ার হোসেন (৪৭)।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা দিনের বেলায় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও সন্ধ্যায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন স্বর্ণের দোকান, শিল্পকারখানা এবং ব্যাংকে ডাকাতি করত।
গত সোমবার রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান চালায়। এ সময় ডাকাতির উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসে অবস্থান করা দশ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মোমেন আরও জানান, চক্রের সদস্যরা দেশের ভিন্ন ভিন্ন জেলায় বসবাস করেন। ডাকাতির পূর্বে তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে একত্রিত হতো। ছদ্মবেশে ব্যাংক, স্বর্ণের দোকান, শিল্পকারখানার বাইরে অবস্থান করে ২/৩ জন ভেতরে প্রবেশ করে এবং মূল দলটি মাইক্রোবাসসহ সুবিধাজনক স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। এই চক্রের সদস্যরা একে অপরের যোগসাজশে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ইতোপূর্বে ১১টি ডাকাতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ মডেল ও সাভার থানা, ডিএমপির শাহআলী, মতিঝিল ও ডেমরা থানা, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানা, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা, মানিকগঞ্জের ঘিওর থানাসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতি মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ এর এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতদলের অন্যতম হোতা ফরহাদ হোসেন। তাদের কথোপকথনের মধ্যে আমরা দেখেছি, ফরহাদ বলেছেন- অনেক তো ডাকাতি করেছি। এটাই শেষ ডাকাতি। সে দীর্ঘদিন ধরে এই ডাকাতি পেশায় জড়িত ছিল।
আরেক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রের মধ্যে কেউ সবজি বিক্রেতা, কেউ দোকানদার ছিল। মূলত তারা ডাকাতি করেই জীবিকা নির্বাহ করত। আমরা যেসব দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছি সেগুলো তারা ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করেছে। ফরহাদ ও হিটু মিয়া তাদের কাছ থেকেই অস্ত্রগুলো পাওয়া গেছে। তারাই মূলত অস্ত্রের জোগানদাতা। ডাকাতির বাইরে নাশকতার কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা জানতে চাইলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ডাকাতির বাইরে নাশকতার কোনো পরিকল্পনা আমরা পায়নি। তাদের প্রধান পেশায় হলো ডাকাতি করা। এর আগে তারা ১১টি ডাকাতি করেছে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ