কেউ জন্মেছেন অন্ধ হয়ে আবার কেউ দুর্ঘটনার পর বরণ করে নিয়েছেন অন্ধত্ব। এমন অন্ধজনদের সার্বিক কল্যাণে গড়ে তোলা হয় জাতীয় অন্ধ সংস্থা। বর্তমানে সংস্থাটির নাম বদলে রাখা হয়েছে জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সংস্থা। সংস্থাটি ‘অন্ধজনে দেহ আলো’ নীতিতে চলার লক্ষ্য থাকলেও সংস্থা সংশ্লিষ্টরা ‘অন্ধ কল্যাণে দুর্নীতির কালো’ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তৎপর।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল আই কেয়ার সেন্টারের করা ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে বর্তমানে অন্ধ সংখ্যা ৭ লাখ ৫০ হাজার জন। বিভিন্ন সৃজনশীল কারুকর্ম, ব্রেইল পদ্ধতির (অন্ধদের বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা) মাধ্যমে উচ্চশিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করা। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন। কম্পিউটারসহ আধুনিক কারিগরি শিক্ষা লাভ। মূলত এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ১৯৬৪ সালে গড়ে উঠেছিল জাতীয় অন্ধ সংস্থা। তবে গত ১০ বছরে নজিরবিহীন সব দুর্নীতিতে জড়িয়ে সংস্থাটি নিজেই এখন ‘প্রতিবন্ধী সংগঠনে’ পরিণত হয়েছে। নেতৃত্বের বিরোধ, স্থাবর সম্পতি দখলের প্রতিযোগিতা, সংস্থার নিজস্ব তহবিলের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ আর উপর্যুপরি মামলা পাল্টা মামলায় এখন স্থবির হয়ে গেছে সংস্থাটির কার্যক্রম।
জানা গেছে, গত ১০ বছরে এসব হানাহানিতে সংস্থাটির সাবেক মহাসচিব সাবেক সচিব সহ খুন হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। এসব কারণে দেশের বিপুল সংখ্যক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিজস্ব স্বার্থ সুরক্ষা নিশ্চিতে কার্যত কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না সংগঠনটি। অভিযোগ আছে গত ১০ বছরে নির্বাচিত তিনটি কমিটি এবং সংস্থাটির বর্তমান কমিটির একাধিক নেতার সহযোগিতায় বহিরাগত সন্ত্রাসী চক্র হাতিয়ে নিয়েছে সংস্থার অন্তত ৫০ কোটি টাকার বেশি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সংস্থাটির নামে সাভার বাসস্ট্যান্ডে ৫ বিঘা জায়গাজুড়ে রয়েছে ২টি মার্কেট। বর্তমান বাজারে যার মূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। ১৯৮৮ সালে তৎকালীন সাভার পৌরসভা সেখানে দ্বিতল মার্কেট করার অনুমোদন দেয়। পর্যায়ক্রমে সেখানে প্রায় ৬ শতাধিক দোকান তৈরি হয়। যার সবই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সাধারণ সদস্যরা জানান, বিক্রীত এসব দোকান থেকে অর্জিত বিশাল অংকের টাকার সঠিক কোনো হিসাব নেই। অন্ধ না হয়েও একটি স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্র এসব সম্পত্তির ভোগ দখল করছেন। সদস্যদের অভিযোগ, এসব কার্যক্রমের নেপথ্যে আছেন সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আবদুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর আব্বাস আলী, সাভার থানা পুলিশসহ উপজেলার একাধিক সরকারঘেঁষা প্রভাবশালী নেতা। কাউন্সিলর আবদুর রহমান যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা এ কে এম মুনসুরের জামাতা।
এসব বিরোধের জেরে গত বছরের ১২ জানুয়ারি রাতে খুন হন অন্ধ মার্কেটের ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান মাফু (৩৮)। নিহত মাহফুজুরের স্ত্রী রোখসানা আকতার পরের দিন ১৩ জনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্ধ মার্কেটের দোকান দখল, মার্কেটের ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ, মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় কমিটির অফিসে নারী নিয়ে ফূর্তিসহ একাধিক ঘটনা জেনে ফেলায় তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত রহিম অন্ধ মার্কেটের ভাড়া উত্তোলন কমিটির সভাপতি।
নিহতের স্ত্রী আরো বলেন, তার স্বামীকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তরা উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নেন; কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী পরে আর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। এরপর থেকেই মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য ক্রমাগত ছেলেসহ তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলেছেন। রোখসানা আরো বলেন, মার্কেটের ভাড়া উত্তোলন দোকান বিক্রিসহ সব কার্যক্রম রহিম প্রকাশ্যেই চালাচ্ছেন। কিন্তু হুমকির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ তাকে ‘খুঁজে পাচ্ছে না’ বলে জানান। বিষয়টি জানতে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর মোহাম্মদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মার্কেটের তিন তলায় মাইফুড রেস্টুরেন্ট নামের হোটেলের ম্যানেজার ফারুক আহম্মেদ বলেন, সংস্থাটির সভাপতি এবং মহাসচিবের সঙ্গে চুক্তিতে তারা হোটেল ভাড়া নিয়েছেন। মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও ডিজাইন ছাড়া বর্ধিত বিল্ডিংয়ে ব্যবসা করার ঝুঁকির বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। এ সময় তিনি আরো বলেন, সাভারের প্রধান বাণিজ্যিক জায়গা হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন নানা অনিশ্চয়তায় ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
মার্কেটে ৫টি দোকান কিনেছেন এমন একজন চিকিৎসক পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন আগে সমস্ত টাকা পরিশোধ করলেও এখন পর্যন্ত দোকানের রেজিস্ট্রেশন করা মালিকানার কাগজপত্র বুঝে পাননি তিনি। অন্ধ সংস্থার বর্তমান কমিটি কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করছেন। দোকানগুলো তিনি ৫ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকায় কিনেছেন। তিনি বলেন, মার্কেটের ২টি ভবনে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ শতাধিক দোকান আছে। স্পেসগুলো কেনার পর তিনি জানতে পারেন যে রাজউক এবং উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মার্কেট বর্ধিত করা হয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়া বিপুলসংখ্যক দোকান তৈরি করায় ভবনটি যে কোনো সময়ে পার্শ্ববর্তী রানা প্লাজার মতে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জাতীয় অন্ধ সংস্থার কাউন্সিল সদস্য ড. হারুন অর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার সংস্থাটিতে ডিক্টেটরশিপ চালু করেছেন। সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিক তার অনুগত পুতুল। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংস্থার সদস্যরা বার্ষিক ১২ টাকা হারে চাঁদা দিতেন। বর্তমান মহাসচিব সেটা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা করেছেন। সাধারণ অন্ধ সদস্যরা সামর্থ্যের অভাবে যাতে বার্ষিক চাঁদা দিতে না পারেন। বারবার নির্বাচিত হওয়ার জন্য কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে মহাসচিবের অনুসারী ছাড়া আর কেউ যেনো থাকতে না পারে— সেটা নিশ্চিত করতেই এমন ব্যবস্থা। সাভারের মার্কেট থেকে আয়ের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করাই বর্তমান কমিটির একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগের গঠনতন্ত্রে প্রায় তিন শতাধিক কাউন্সিল মেম্বার থাকলেও বর্তমান মহাসচিব তার বিরুদ্ধ মতের সদস্যদের সংখ্যা কমিয়ে ১৯০ জন করেছেন। মহামারী করোনার সময়েও তারা নির্বাহী কমিটির একতরফা নির্বাচন করেছেন। যেখানে সাবেক মহাসচিব খলিলুর রহমানের দণ্ডিত হত্যাকারীরাও অংশ নিয়েছেন।
ড. রশিদ আরো বলেন, অন্ধদের কল্যাণে দেশ বিদেশে থাকা ধনী ব্যক্তি ও সংগঠন গোপনে মোটা অংকের টাকা অনুদান দেন। সেজন্য এরকম একটি জাতীয় সংস্থার আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব এবং বার্ষিক অডিটের জন্য একজন যোগ্য কোষাধ্যক্ষ রাখা জরুরি। কিন্তু বর্তমান মহাসচিব এই পদে একজন অযোগ্য কাঁচামালের ব্যবসায়ীকে নির্বাচিত করেছেন। যার কাছে সংস্থার প্রকৃত আয়-ব্যয়ের কোনো হিসেব নেই। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংস্থার সাথে ২১ আগস্টেও গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভী রহমান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন জড়িত ছিলেন। তারা ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ফর দ্যা ব্লাইন্ড নামের আলাদা একটি সংগঠন করেছিলেন। আইয়ুব আলী নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে জাতীয় অন্ধ সংস্থাকে ভিটিসিবি নামের ওই সংগঠনের সাথে একীভূত করেছেন। মূলত আইভী রহমানের মৃত্যুর পর থেকেই সংগঠনটি ক্রমান্নয়ে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। যা দেখার কেউ নেই।
ড. রশিদ অভিযোগ করেন, বর্তমান মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি সমাজসেবা অধিদফতরের নিবন্ধন শাখার সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার হালদারকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ দিয়ে জাতীয় অন্ধ সংস্থার নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা’ করেছেন। এতে করে যে কোনো সময়ে জাতীয় অন্ধ সংস্থার নামে থাকা সম্পদ অন্ধদের হাতছাড়া হতে পারে। যার বাজার মূল্য ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে সংস্থাটি আগের নামে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্লাইন্ড অ্যাসোসিয়েশনের নথিতে সংস্থাটি আগের নামেই নিবন্ধিত। নিজস্ব স্বার্থজনিত কারণে হঠাৎ সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করায় আন্তর্জাতিকভাবে আসা সাহায্য থেকেও বঞ্চিত হবে সংস্থাটি। এসব অনিয়মের কারণে সংস্থাটিতে যেন কোনোভাবেই কোয়ালিটি লিডারশিপ গড়ে উঠতে না পারে সেটাই নিশ্চিত করছেন সংস্থাটির বর্তমান নির্বাহী কমিটির নেতারা।
জাতীয় অন্ধ সংস্থার সাবেক মহাসচিব মিনহাজ উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, সংস্থার টাকায় আইয়ুব আলী বরিশালের বাকেরগঞ্জে আলিশান বাড়ি বানিয়েছেন। সাভারে কয়েক বিঘা জমিসহ ঢাকায় কিনেছেন একাধিক ফ্ল্যাট। মিরপুরের ১৩ নাম্বার সেকশনের রাখাইন সিটিতে আইয়ুব আলীর রয়েছে ১টি আলিশান ফ্ল্যাট। নিজের ১টি পাজেরো গাড়ি ছাড়াও ছেলে তানভীরের রয়েছে ১টি প্রাইভেট কার।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বর্তমান সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিক ও মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার একক সিদ্ধান্তে সংস্থাটির নামে থাকা সাভারের ৫ বিঘা জমি তুলে দেন ফেয়ারি হোল্ডিং লিমিটেডের কাছে। ডেভেলপার কোম্পানিটি চুক্তি অনুযায়ী জমির মূল্য ও সাইনিং মানি বাবদ ৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা দেন— যার কোনো হিসেব নেই। সাধারণ অন্ধদের সম্পদ রক্ষায় সভাপতি ও মহাসচিবের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন সাবেক মহাসচিব মিনহাজ উদ্দিন। পিটিশনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ জায়গাটির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। হাইকোর্ট এবং রাজউকের চলমান নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও অন্ধদের স্বার্থ পরিপন্থী সব কাজ চলমান রেখেছেন কমিটির বর্তমান নেতারা।
মিনহাজ উদ্দিন বলেন, তিনি ছাড়া আরো ২৬ জন সাধারণ অন্ধ বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে রাজউকের প্রধান পরিদর্শক (চিফ ইন্সপেক্টর) নূরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফাইলটি আমাদের আইন শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখানকার কাজ শেষে আমরা মার্কেটের সামনে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে একটি সতর্কীকরণ নোটিশ লাগাব।’ উচ্চ আদালতের নির্দেশে বুয়েটের পরীক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করার পরেও মার্কেট বর্ধিত করার কার্যক্রমে রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কি ব্যবস্থা নিয়েছেন’— এমন প্রশ্নের জবাব দেননি এই প্রকৌশলী।
অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার ৬ নম্বর অরফানেজ রোডের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৪টি ভবনের ভেতর একটি ভাড়া দেয়া হয়েছে কান্ট্রি ফুড নামের বেকারি পণ্য তৈরির কারখানাকে। জিজ্ঞেস করলে কারখানার ম্যানেজার সেন্টু বলেন, যতদূর জানি ২০ লাখ টাকা অগ্রিম নেয়া হয়েছে। যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ আলম মোবাইলে এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এখানকার ভবনগুলোতে বসবাসকারী বিভিন্ন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা সবাই মহাসচিবের নিকটাত্মীয়।
অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার বলেন, ‘‘আমরা সংগঠনে কোনো ভিখারি চাই না। যারা বছরে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা ফি দিতে অপারগ তাদের সংগঠনে থাকার যোগ্যতা নেই। মার্কেটের টাকা আত্মসাত ছাড়াও বিপুল পরিমাণের ব্যক্তিগত সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি যেখানে চাকরি করেন সেখান থেকেই যেমন খরচের টাকা বা বেতন নেবেন, আমিও তাই করছি’।’’ সাধারণ এবং কাউন্সিল সদস্যদের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে হেরে একটি পক্ষ আমাদের বিষয়ে মিথ্যাচার করছেন।’
জানতে চাইলে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের কাজের উন্নতি দেখে বিবাদমান একটি পক্ষ এসব অভিযোগ ছড়িয়েছেন।’ সাবেক মহাসচিব খলিলুর রহমান হত্যায় দণ্ডিত আসামি হয়েও নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব না দিয়ে ফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে পরাজয় আর তহবিলের কয়েক কোটি টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি রাতে মিরপুরের জনতা হাউসিং এলাকায় খুন হন সংস্থাটির তৎকালীন মহাসচিব মো. খলিলুর রহমান। এর ৬ মাস পরে ২০১১ সালের ৬ জুলাই অরফানেজ রোডের প্রধান কার্যালয়ের ভেতরে খুন হন সংস্থাটির তৎকালীন সচিব ইদ্রিস আলী।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ