রেলের স্টাফদের অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন রানিং স্টাফরা। তবে এ বিষয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
প্রতিদিন একজন চালককে কাজ করতে হয় গড়ে ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা। এ জন্য বাড়তি মজুরি ও পেনশনে ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দেওয়া হয় তাদের। তবে অতিরিক্ত এসব সুযোগ সুবিধা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর এতে ক্ষুব্ধ রানিং স্টাফরা।
সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্রিটিশ আমল থেকে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্বপালন করা চালক, গার্ড ও টিকিট চেকারদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়। প্রতি ১০০ মাইল ট্রেন চালালে দেওয়া হয় মূল বেতনের এক দিনের সমপরিমাণ অতিরিক্ত টাকা। পেনশনের সাথেও দেওয়া হয় বাড়ি ৭৫ শতাংশ টাকা। ১০০ বছর ধরে এভাবেই বেতন পেয়ে আসছেন ট্রেনের রানিং স্টাফরা।
তারা বলেন, আমাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। আমরা দিন রাত ২৪ ঘণ্টা সারাবছর কাজ করি। ঈদের দিনেও আমরা কাজ করি। আমাদের এতো দিনের সুবিধা বাতিল করা হবে কেন?
ঘণ্টার হিসেবে প্রতি এক মাসে রানিং স্টাফদের ডিউটি দাঁড়ায় আড়াই থেকে তিন মাসের সমপরিমাণ। সে অনুযায়ী বেতনও পেয়ে আসছেন তারা। কিন্ত রাষ্ট্রের বেসামরিক কর্মচারীদের অতিরিক্ত ভাতা পাওয়ার সুযোগ নেই মর্মে, অর্থ-মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়, রানিং স্টাফরা যতই ডিউটি করুক শুধুমাত্র এক মাসের সমপরিমাণ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হবে। বাতিল করা হয় অবসরকালীন ভাতার বাড়তি ৭৫ শতাংশ টাকাও।
রেলের ক্ষুব্ধ স্টাফরা বলেন, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে ৮ ঘণ্টার বেতন নেব কেন? তাহলে আমরাও ৮ ঘণ্টা বেশি ডিউটি করব না? যেখানে ৮ ঘণ্টা শেষ হবে সেখানেই গাড়ি বন্ধ করে দেব। এই টাকা আমাদের প্রাপ্য।
রেলের শ্রমিক নেতারা বলছেন সমস্যার সমাধান না হলে ২৬ ডিসেম্বর থেকে কর্ম বিরতিতে যাবেন তারা।
রেলের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির জিবুর রহমান বলেন, আমরা কাজ করে টাকা নিই। কাজের মজুরি না পেলে ৮ ঘণ্টা ডিউটি শেষ হলেই কাজ বন্ধ করে দেব। আমাদের দাবি না মানা হলে, ২৬ ডিসেম্বর থেকে আমরা কর্ম বিরতিতে যাব।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলছেন, অর্থ-মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে দ্রুতই মিলবে সমাধান।
মন্ত্রী বলেন, এটা যাতে দ্রুত সমাধান হয় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সমাধান যাই আসুক, সবাই জানতে পারবে।
সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রেন চালক দরকার হলেও আছে মাত্র এক হাজার।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ