মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো বেশি অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ৫০তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্র প্রধান।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, উন্নয়নের এ ধারাকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখতে বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দেশে আজ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দানের লক্ষ্যে সরকার ‘ভিশন ২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং শতবর্ষ মেয়াদী ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য হলো জাতিসংঘ ‘টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২০৩০’ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা।
দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, এ বছর দেশবাসী আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, যা বাঙালির বিজয়োৎসবে যোগ করেছে অনন্য এক মাত্রা।
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধশেষে ১৯৭১ সালের এদিনে আমরা বহু প্রতীক্ষিত বিজয় অর্জন করি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জন জাতিকে এনে দিয়েছে একটি সার্বভৌম দেশ, স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান, নিজস্ব মানচিত্র ও লাল-সবুজ পতাকা। তবে এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস।
রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করে আবদুল হামিদ বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’, জাতির পিতা ঘোষিত এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে দেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তিতে বিশ্বাসী। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ও নির্যাতিত লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী।
করোনাযুদ্ধে জয়ী হতে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ