ঢাকা সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে তিনি স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। দুপুর সাড়ে ১২টার পর তিনি সেখানে পৌঁছান।
শ্রদ্ধা জানানোর পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। শহীদদের প্রতি সামরিক কায়দায় সশস্ত্র সম্মান জানায় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল। এ সময় বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ। সই করেন স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সহধর্মিণী সবিতা কোবিন্দ ও কন্যা স্বাতি কোবিন্দ।
সাভারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি জাদুঘর ঘুরে দেখবেন।
সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের রাষ্ট্রপতি। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কোবিন্দকে স্বাগত জানান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
জানা গেছে, রামনাথ কোবিন্দের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন ভারতের ফার্স্টলেডি, রাষ্ট্রপতির কন্যা, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সফরসূচি অনুযায়ী, বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে প্রদান করবেন। এরপর রামনাথ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।
আশা করা হচ্ছে, ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতে দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের রাষ্ট্রপতি গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজাতে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত মহাবিজয়ের মহানায়ক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।
সফরের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর রামনাথ ঢাকার রমনাস্থ কালী মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। ওইদিন দুপুর তিনি দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ