র্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, রক্ষাতেই সবসময় কাজ করে আসছে বলে জানিয়েছেন এলিট এ ফোর্সটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল খান মোহাম্মদ কে এম আজাদ।
তিনি বলেছেন, ‘র্যাব কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না। সবসময় মানবাধিকার রক্ষা করে আসছে। মানুষের অধিকার রক্ষা করাই র্যাবের প্রধান দায়িত্ব। আমরাই (র্যাব) বড় মানবাধিকারকর্মী।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ‘গুরুতর’ অভিযোগ তুলে র্যাব এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার প্রবেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছেন কর্নেল আজাদ।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, খুন, ধর্ষণ করে মাদক ব্যবসা চালায়, দেশ এবং জনগণের স্বার্থেই আমরা তাদের আইনের আওতায় এনে থাকি। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকে, তাহলে দেশের স্বার্থে এই মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে আমাদের আপত্তি নেই।’
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার ওই তালিকায় বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী র্যাব ও এ বাহিনীর সাবেক-বর্তমান ছয় কর্মকর্তার নামও রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ও র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নামও রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছেন—র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান ও র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক (লেফটেন্যান্ট কর্নেল) মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ।
তাদের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগ রয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়।
এদিকে, র্যাব ও এই বাহিনীর ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রতিটি ঘটনা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তদন্ত করা হয়ে থাকে। কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসার বুড়িগঙ্গা হলে ‘আদর্শ গ্রাহক সম্মাননা স্মারক-২০২১’ বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বস্তুনিষ্ঠভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তারা অতিরঞ্জিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাদের কোনো সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না। করলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা চ্যালেঞ্জিং। মাদক কারবারিরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। দেশের প্রশিক্ষিত বাহিনী অভিযান চালালে তারা অস্ত্র ব্যবহার করায় গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ