ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারতেও ওমিক্রনের থাবা, সতর্ক বাংলাদেশ

প্রকাশনার সময়: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:০৬
সংগৃহীত ছবি

আফ্রিকা, ইউরোপের দেশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতেও থাবা বসাল করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। দেশটির কর্ণাটক রাজ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দুইজনের দেহে শনাক্ত হয়েছে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট। দেশটিতে ওমিক্রন শনাক্তের ঘটনা এটিই প্রথম।

এ তথ্য নিশ্চিত করে নয়াদিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ওমিক্রন শনাক্ত ২ জনের সব সেকেন্ডারি কনট্যাক্ট ট্রেস করা হয়েছে এবং সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে ২ জনের ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়। আক্রান্ত দুইজনের একজনের বয়স ৬৬ বছর, অপরজন ৪৬ বছরের ব্যক্তি।

এনডিটিভি জানায়, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে আক্রান্ত দুইজনের পরিচয় আপাতত প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এদিকে, বাংলাদেশে ওমিক্রন ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় আছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতিমধ্যেই সকল বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক, সকল জেলার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ১৫ নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তা করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলা কমিটিগুলোকে চিঠি দিয়ে কার্যকর করার কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কমিটিগুলো এই নিয়ে কাজও শুরু করেছে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, ওমিক্রন নিয়ে সবাই একটু চিন্তিত। আমরাও সতর্ক। কিন্তু আমরা প্যানিক করবো না।

কুড়িগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, নির্দেশনা পেয়েছি। ওমিক্রন করোনারই চলমান প্রক্রিয়া। বুধবার জেলা কমিটির সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠকও হয়েছে। সতর্ক অবস্থায় আছি। সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়েছে।

ওমিক্রন ঠেকাতে দেশের স্বাস্থ্যখাত দেশব্যাপী ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে_

১. সাউথ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো এবং বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার সময় সময় ঘোষিত অন্যান্য আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বন্দরসমূহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।

২. সকল ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৩. প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারন ক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে।

৫. সকল প্রকার জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে।

৬. মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।

৮. আক্রান্ত দেশসমূহ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

৯. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (সকল মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ^বিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে হবে।

১০. সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা গ্রহীতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

১২. করোনা উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. কোভিড-১৯ এর লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে।

১৪. অফিস প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সময়ে বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

১৫. কোভিড-১৯ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করার নিমিত্তে কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং ও প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ/মন্দির/গির্জা/প্যাগোডা সহ উপাসনা কেন্দ্রে মাইক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ