ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন চাঁদপুরের সুমি। দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ মা সুস্থ আছেন। হাসপাতাল থেকেও তাদের ওপর রাখা হচ্ছে বাড়তি নজরদারি।
তবে, নবজাতকদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা ভর করছে পরিবারটির ওপর। সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঢামেকে সিজারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হয় শিশু ৪টি।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) শিশুদের খালু মো. মোস্তফা কামাল অপু জানান, সুমি আক্তার ও কবির হোসেন দম্পতির বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায়। বর্তমানে থাকেন সাভারের রাজাশন এলাকায়। সাত বছর বয়সী ছেলের পর দ্বিতীয় সন্তানের আগমণের খবরে পরিবারে চলছিল অন্য রকম আমেজ। সুমি ৬ মাস অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন, একটি নয়, দুটি নয়, তার গর্ভে রয়েছে চার সন্তান।
রোববার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সুমিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরদিন সোমবার চিকিৎসকরা তার সিজার করেন। সুন্দরভাবেই অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন হয়।
শিশুদের নানি হাসনে আরা জানান, ৪ নবজাতক সুস্থ আছে। মায়ের বুকের দুধ পান করছে। পাশাপাশি বুকের দুধ পান করাচ্ছেন আপন চাচিও।
শিশুদের চাচা কামাল হোসেন জানান, মিরপুর এলাকায় ফুটপাতে চায়ের দোকান করতেন তাদের বাবা কবির হোসেন। তবে সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদের কারণে বর্তমানে বেকার তিনি। পরিবারের খরচও বহন করতে হচ্ছে স্বজনদের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে। একারণে সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত গোটা পরিবার।
ঢামেকের গাইনি বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট রেজিস্টার ডা. উম্মে আরা বেগম বলেন, এ রকম ডেলিভারির ঘটনা আমাদের জন্য রেয়ার। অধ্যাপক ডা. ফাতেমা রহমানের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হয়েছিলেন সুমি। চার সন্তানের দুইজনের ওজন ১৫শ গ্রাম ও দুইজনের ওজন ১৮শ গ্রাম করে। তারা ৪ জনই সুস্থ আছে। তবে ওজন কম হওয়ায় তাদেরকে বিশেষ সেবার জন্য নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। তবে, সেটি আর লাগেনি।
শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শারীরিক কোনো জটিলতা দেখা দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, পরিবার যদি তাদেরকে পরিপূর্ণ যত্ন নিতে পারে তাহলে পরবর্তীতে শারীরিক কোনো জটিলতার আশঙ্কা নেই।
এ বিষয়ে কথা হলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, আমাদের এখানে সুমি নামে ওই নারীর ৪ শিশু হয়েছে। এটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং জব। অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্সদের দ্বারাই এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা তাদেরকে বাড়ি ফেরার আগ পর্যন্ত সব চিকিৎসা সেবাই দিয়ে যাবো। তাদেরকে কেবিনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ