চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় খাবার নিয়ে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব চরম আকারে পৌঁছেছে। এই দ্বন্দ্বে গত ১৩ দিনে ৭টি হাতি হত্যা করা হয়েছে। এ যেন হাতি হত্যার উৎসব চলছে! অথচ বনবিভাগের পক্ষ থেকে কোন জবাবদিহিতা নেই। এই হত্যার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, গ্রেফতারও নেই।
এমন হিংস্রতার কারণ বিশ্লেষণের তাগিদ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাতি রক্ষায় আইনি উদ্যোগের সঙ্গে চাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ। শুধু মামলা নয়, প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও।
আজ রোববার (২১ নভেম্বর) কক্সবাজার চকোরিয়ায় ফুলছড়ি রেঞ্জের উত্তর বনবিভাগে রাজঘাট বিট এলাকায় আরও একটি হাতি হত্যা করা হয়েছে।
এলাকাবাসির বক্তব্য, রাতে হাতিটিকে কারেন্টের শক দেওয়া হয়েছে। এরপর চিৎকার ব্যথা-বেদনা নিয়ে দিশাহীন হয়ে এক পর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সকাল হলে সবার নজরে আসে হাতিটির মৃতদেহ।
এর আগে চট্রগ্রামে সাতকানিয়া, শেরপুরের শ্রীবরদী, চকোরিয়ার পূর্ণগ্রাম, চট্রগ্রামে বাঁশখালি চাম্বল বিট, কক্সবাজার চকোরিয়া হারবাঙ, শেরপুরের পানিহাটা, কক্সবাজার রাজঘাট বিট এলাকায় গত তেরোদিনে ৬টি হাতি হত্যা করা হয়।
তবে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সাংবাদিক হোসাইন সোহেলের দাবি, ‘আরও একটি হাতি গুম রয়েছে শেরপুরের শ্রীবরদীতে যার কোন ট্রেস পাওয়া যাচ্ছেনা।’
হোসাইন সোহেল বলেন, ‘এরপরও বনবিভাগের পক্ষ থেকে কোন জবাবদিহিতা নেই। শুধু তাই নয় এসব হত্যাকাণ্ডের কোন মামলা বা গ্রেফতারও নেই। নেই কোন তদন্ত। কেন?’
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন তারা নিজেদের দায় এড়াতে সর্বদা ফেইসবুকে এসে হাতি হত্যার জন্য মায়া কান্না করছেন। বাস্তবে এসে কোনো ভূমিকা নিচ্ছেন না।’
‘জাতি জানতে চায় এসব হত্যাকাণ্ডের কারণ কি? বনবিভাগের দূর্বলতা কোথায়? কেন মুখে কুলুপ এটে রেখেছেন?’ যোগ করেন হোসাইন সোহেল।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, হাতির কারণে কৃষকের ফসল নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, যার মূল্য আগের চেয়েও বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না হাতি হত্যা।
ক্ষুদা নিবারণের জন্য মানুষের কৃষি ক্ষেতে থাবা দেওয়ার ফলেই এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড চলছে। কারেন্টের শক দিয়ে একের পর এক হাতিকে মারা হচ্ছে। এমন মৃত্যু ‘মহাবিপন্ন’ প্রাণিটির জীবনযাত্রাকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলছে। ছোট হয়ে আসছে হাতির প্রতিবেশ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ