জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না কেউ। আর তাতেই খেপে উঠেছে নতুন প্রজন্ম। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রনেতাকে করা হলো প্রতীকী কারাবন্দি। শিশুরা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ধরিত্রীর ক্ষতি হচ্ছে। এ ক্ষতি ঠেকাতে বিশ্বনেতারা উদ্যোগ না নিলে তাদের কারাগারেই আটকে রাখা হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমন অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি দেখা গেছে।
জলবায়ু বিপর্যয় রোধে ব্যর্থতার দায়ে ‘বিশ্বনেতাদের খাঁচায় বন্দি করো’ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করে ‘স্টপ এমিশনস নাও বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীমা রহমান বন্দি বিশ্বনেতাদের দিকে আঙুল তুলে বলেন, এরা হলেন বিশ্বের বড় বড় নেতা। জলবায়ু নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এরপরও তারা যদি পদক্ষেপ না নেন, তাহলে আমরা সারাজীবনের জন্য তাদের জেলে রাখতে বাধ্য হব। চাবি কিন্তু আমাদের হাতে!
প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বলা হয়, জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে প্রকৃতি চরম ও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। এ বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক দেশগুলো। দেশের এক কোটি ৯০ লাখের মতো শিশু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। অথচ জলবায়ু বিপর্যয় ও বৈশ্বিক উন্নয়নের লাগাম কিছুতেই টেনে ধরা যাচ্ছে না শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সদিচ্ছা না থাকায়। প্রতীকী এ কর্মসূচিতে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বানানো হয় বন্দিশালা। তাতে মুখোশ পরিয়ে প্রতীকীভাবে আটকে রাখা হয় বিশ্বনেতাদের।
কর্মসূচিতে এমিশনস নাও বাংলাদেশের সদস্য সচিব মঞ্জুরুল হাসান বলেন, জলবায়ু বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি। কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্বনেতারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। প্রাণ-প্রকৃতির অস্তিত্ব যখন বিনাশের পথে তখন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তারা এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। ফলে বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় দেশগুলোর জন্য এ বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
সংগঠনের সদস্য সামিউল হাসান বলেন, শিল্পোন্নত দুনিয়া বিশেষ করে জি-টোয়েন্টি দেশগুলোর লাগামহীন কার্বন নিঃসরণ এবং মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এই অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ অনুষ্ঠিত হলেও শুধু আলোচনা ছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এ উদাসীনতা ও ব্যর্থতার প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম বিশ্বনেতাদের প্রতীকী খাঁচায় বন্দি করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্টপ এমিশনস নাও বাংলাদেশের সদস্যরা।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ