গত ২৮ অক্টোবর বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে কারখানা থেকে ছুটি নিয়ে মানিকগঞ্জ সদরের আইমারায় গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন আমিনুল।
বাবার মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালন করে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় আসেন তিনি। ঢাকায় এসে সারাদিন কারখানায় জুতা বানানোর কাজ শেষে রাতে দোতলায় যান ঘুমাতে। এ ঘুমই হলো আমিনুলের জীবনের শেষ ঘুম।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর সোয়ারীঘাটের কামালবাগে রোমানা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে জুতার কারখানায় লাগা আগুনে ঘুমের মধ্যে দগ্ধ হয়ে মারা যান শ্রমিক আমিনুল ইসলাম। আগুনে আমিনুল এতটাই দগ্ধ হয়েছেন যে তাকে ঠিকভাবে চিনতে পারছেন না স্বজনরা। তার পরনে থাকা লুঙ্গি ও গেঞ্জির পুড়ে যাওয়া অংশ দেখে স্বজনরা শনাক্ত করতে পারলেও একই মরদেহের আরও দাবিদার থাকায় মরদেহটি এখনও দেয়া হয়নি পরিবারের কাছে। ডিএনএ টেস্টের আগে মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা।
তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট আমিনুল ইসলাম। ছোট ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে বড় বোন মোসাম্মৎ বিলকিসকে আহাজারি করতে দেখা যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে আদরের ছোট ভাইয়ের মরদেহ না নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১টা দিকে সোয়ারীঘাটের কামাল বাগে ‘রোমানা রাবার' নামের ওই কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা কাজ করে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কারাখানা থেকে পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
নিহতরা হলেন- মানিকগঞ্জের আমিনুর রহমান (৩০) ও কিশোরগঞ্জের শামীম মিয়া(৩৫), চাঁদপুরের মনির হোসেন (৩১), বরিশালের আব্দুর রহমান রুবেল (৩৫) ও শেরপুরের কামরুল ইসলাম (২২)।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ