সরকারি সব চাকরিতে ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল সহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। একই সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এই দাবি জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ টাঙ্গাইল জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার জহুরুল হক ডিপটি। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম (কদেরীয়া বাহিনী), মনির খন্দকার, মো. আলী চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, আব্দুস সালাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রহমান প্রমুক। এসময় বিভিন্ন জেলা উপজেলার দুই শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিতি ছিলেন।
দাবিগুলো হল- বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সর্বস্তরে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ থাকতে হবে। সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ৪০ হাজার টাকায় উন্নীত করা। গেজেট প্রকাশ করে পরিচয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্মানের ব্যবস্থা ও মুক্তিযোদ্ধা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বসতভিটায় সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় খরচে মানসম্মত বাসস্থান ও রেশনের সু-ব্যবস্থা করা। বিনা সুদে ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি খরচে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসাপাতালে সর্বোত্তম চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খাজনা, পৌরকর, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল মওকুফ সহ যানবাহনে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতে ব্যবস্থা করা। মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারি খরচে পবিত্র হজ্জব্রত পালনের ব্যবস্থা করা।
পহেলা ডিসেম্বরকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা দেয়া।
সভায় বক্তারা বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকাকে রাজাকারের গাড়িতে তুলে দেয়া হয়েছিল। দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ চিহ্নটুকুও মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে অপসারনের চেষ্টা চালাছে। চারিদিকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাই মুক্তিযোদ্ধের সজাগ থাকতে হবে। যাতে রাজাকার- আলবদরা আবারও ক্ষমতায় বসতে না পারে।তারা আরও বলেন, আজ মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ণ করা হয় না। তাই কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে সর্বত্র নির্বাচন দিতে হবে। এছাড়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসছে না তালিকায়। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি তাদের অর্ন্তুভুক্ত করা হচ্ছে। ভাতাও পাচ্ছে তারা। এতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হচ্ছে। তাই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
খন্দকার জহুরুল হক ডিপটি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী দেয়ায় সারা দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আজকের এই সভার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। যাতে অকুতোভয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুর পূর্বে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ