পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন মো. আলমগীর। তার দেয়া তথ্যে অনেক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরই একজন মো. রিমন। সোর্স আলমগীরের দেয়া তথ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন রিমন। কারাগার থেকে বেরিয়ে ক্ষোভে কুপিয়ে হত্যা করেন সোর্স আলমগীরকে।
হত্যার অভিযোগে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে মো. রিমন ও তার সহযোগী মহিউদ্দিন শিবলুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, গত শুক্রবার রাতে রামপুরা থানার বৌবাজার এলাকার বরফগলিতে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সোর্স আলমগীর। এ সময় অভিযুক্ত রিমন ও মহিউদ্দিন শিবলু পেছন থেকে হঠাৎ তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যান।
আহত আলমগীরকে প্রথমে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে নেয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। শনিবার আলমগীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, অভিযুক্ত রিমন পেশাদার মাদক কারবারি। আলমগীরের সঙ্গে তার একসময় বন্ধুত্বও ছিল। আলমগীরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুলিশ রিমনকে গ্রেফতার করে। কারাগার থেকে বেরিয়ে ক্ষোভে পরিকল্পনা অনুযায়ী আরেক অভিযুক্ত মহিউদ্দিনকে নিয়ে আলমগীরকে হত্যা করে রিমন। রিমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনে মোট ১৮টি মামলা আছে।
বিভিন্ন সময়ে পুলিশের সোর্সের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, তারা হামলা এমনকি হত্যার শিকার হন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পেয়েছি, সোর্স নিজেরাই ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের জন্য নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে। নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। তাদের সাধারণত পরিচয় গোপনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। তাদের অনেকেই তা মানে, অনেকেই আবার মানে না।
আলমগীর হত্যা মামলায় রিমন এবং শিপলু ছাড়া অন্য কারো নাম উল্লেখ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এই দুইজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পেয়েছি। এর বাইরে এই মামলায় অন্য কারো নাম আমরা পাইনি। তবে এর বাইরেও অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে কিনা সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের সোর্সের বিরুদ্ধেও মাদক কারবারসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ থাকে, সেক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় কিনা- জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, সোর্স ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি নির্ভর করে কী ধরনের লোককে সোর্স বানানো হচ্ছে- তার ওপর। সবসময় অপরাধীকেই সোর্স বানানো হয়, বিষয়টি তা নয়।
তিনি বলেন, সোর্স নির্ধারণ কীভাবে হবে, তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়। তবে কিছু সাধারণ নীতিমালা আমাদের রয়েছে। যারা খুব বেশি অপরাধকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের সোর্স হিসেবে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ