আইনজীবী ছাড়াই একের পর এক বিচারপ্রার্থীর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সরাসরি দাঁড়ানোটা ফ্যাশন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার বেশ কয়েক বিচারপ্রার্থী সরাসরি মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করতে আদালতে হাজির হলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করেন।
সকালে আপিল বিভাগের বিচার কাজ শুরু হলে প্রথমেই দুই নারী বিচারপ্রার্থী দাঁড়িয়ে তাদের চাকরিসংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে আবেদন করেন। মানবিক দৃষ্টি দিয়ে আদালতের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।
তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমাদের আইনমাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখব না। আমরা দেখব আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে। মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। মানবিক এতটুকুই করতে পারব মামলাটা তাড়াতাড়ি শুনব। পরে আজ মঙ্গলবার তাদের মামলাটি শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেন।
এটা দেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো মহা মুশকিল। আপনার আইনজীবী কই? এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার আইনজীবী কে? জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু। তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাঁড়াতে পারেন না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।
এরপর আরেকজন আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মুয়াজ্জিন। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের জাকাত ফিতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামলাটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন। একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এরপর থেকে যেসব আইনজীবীর ক্লায়েন্ট সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে, আমরা তার সনদ বাতিল করে দেব। মঙ্গলবার থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাঁচজন মিলে বাতিল করে দেব।
আপনার আইনজীবী আছে কিনা আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, উকিল আছে। অনেক টাকা চায়। তখন আদালত বলেন, আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনব। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান। পরে আদালত কার্যতালিকা অনুসারে শুনানি শুরু করেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ