দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলের জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে উপকূলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স ও ফেইথ ইন একশন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি জানান বক্তরা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র মিহির বিশ্বাস, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, ফেইথ ইন একশনের নির্বাহী পরিচালক নৃপেন বৈদ্য, সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, সাংবাদিক গাজী শাহনেওয়াজ প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে বার্ষিক তহবিল বাড়ানোর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রতিবছর বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণ এবং উপকূলের মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য আগামীতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আগামীতে সরকারের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়ন বিভিন্ন প্রকল্প নিতে হভে। অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। এ জন্য বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ বুঝিয়ে দিতে হবে। এই ক্ষতিপুরণ আদায়ে সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে যথাযথ ভূমিকা রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তারা।
সমাবেশে ৮টি দাবি তুলে ধরেন বক্তরা। দাবিগুলো হলো- জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ করতে হবে। পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টারসহ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।
গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে বছরব্যাপী বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ঝড়-ঝঞ্ঝা ও ভূমিক্ষয় রোধে উপকূলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ এবং সবুজবেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। একইসঙ্গে বিশ^ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ