ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

মুহিবুল্লাহ ‘কিলিং মিশন’ ২ মিনিটেই শেষ করে ৫ অস্ত্রধারী

প্রকাশনার সময়: ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৫:১২ | আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৭:২৭

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও নেতা হিসেবে উত্থান ঠেকাতে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)'র চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে। একটি দুর্বৃত্ত সংগঠনের শীর্ষ নেতার নির্দেশে হত্যা মিশনে অংশ নেন ১৯ দুর্বৃত্ত। এদের মাঝে ৫ জন ছিলেন অস্ত্রধারী। পূর্ব প্রস্তুতি মতে কয়েক মিনিটেই কিলিং মিশন শেষ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ তরে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেফতার ও হত্যার ছক সম্পর্কে জেনে প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক।

এর আগে শনিবার ভোরে মুহিবুল্লাহ হত্যায় কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আজিজুল হককে লাম্বাশিয়া পুলিশ ক্যাম্পের লোহার ব্রিজ এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে এপিবিএন-১৪ এর সদস্যরা।

আজিজুল হকের স্বীকারোক্তিতে সে ছাড়াও হত্যায় সহযোগীতা করা কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর ডি ৮ ব্লকের আব্দুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ ওরফে মুরশিদ আমিন ও একই ক্যাম্পের বি ব্লকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাস ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুলের স্বীকারোক্তির কথা জানিয়ে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক বলেন, মুহিবুল্লার হত্যার দুই দিন আগে মরকাজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য বৈঠক করে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে ১৯ জনকে মিশনে অংশ নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে ৫ জনকে সশস্ত্রাবস্থায় পাঠানো হয়।

জিঙ্গাসাবাদে পুলিশকে আজিজুল হক জানিয়েছে, দিন দিন মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে পরিচিত হচ্ছে। তার উত্তান ও প্রত্যাবাসন ঠেকাতে যেকোন মূল্যে তাকে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মতো ২৯ সেপ্টেম্বর এশার নামজের পর বাসায় চলে যাওয়া মুহিবুল্লাহকে বাসা থেকে অফিসে ডাকা হয়। প্রত্যাবাসন বিষয়ে কয়েকজন কথা বলতে ডাকছে বলে বাসা থেকে বের করে আনে গ্রেফতারকৃত আরসা সদস্য মুরশিদ। তারপর বাকিদের সংকেত দিয়ে সে অফিস থেকে চলে যায়।

নাইমুল হক আরও জানান, সশস্ত্র টিম অফিসে ঢুকে একজন মুহিবুল্লাহকে বলে 'উঠ' তোর সাথে কথা আছে। বসা থেকে উঠতেই প্রথমজন একটি, তার পরেরজন দুইটিসহ চারটি গুলি করা হয় মুহিবুল্লাহকে। তারপর মুহিবুল্লার বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যায় স্কোয়াডের ৫ জন। পরে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। বিভিন্নজনের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।

হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং যেকোন সময় তারা গ্রেফতার হতে পারে বলে জানান এপিবিএনের এ কর্মকর্তা।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

পরের দিন (৩০ সেপ্টেমর) নিহত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ অজ্ঞাত নামা ১৫-থেকে ২০জনের অজ্ঞাত আসামী করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আগে ৫জন সন্দেহভাজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ইলিয়াস নামের একজন রোহিঙ্গা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার ৪জন সহ এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন গ্রেফতার হলো।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ