ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বন্ধ হচ্ছে না বৈধ-অবৈধ কোনো মুঠোফোন

প্রকাশনার সময়: ২১ অক্টোবর ২০২১, ২২:৫৭ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২১, ২৩:০০

অনিবন্ধিত বা অবৈধ মোবাইল ফোন যেকোনো নেটওয়ার্কে চালু হলেও তা বন্ধ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, ব্যবস্থাটি চালুর পর আমি দেখছিলাম মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এখনো বাজারে বিক্রি হওয়া মোট ফোনের ৭০ শতাংশ হয় ফিচার ফোন। সেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। তাদের জন্য নিবন্ধন একটি ভোগান্তির কাজ। বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ জানে না কীভাবে মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর (শনাক্তকরণ নম্বর) দিয়ে বৈধ-অবৈধ যাচাই করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মন্ত্রী বলেন, এসব বিষয় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে আলাপ করেন। তিনি (উপদেষ্টা) মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। সে অনুযায়ী বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকাশের জন্য মুঠোফোনের ব্যবহার আরও বাড়ানো দরকার। সেখানে যদি দেখা যায় মুঠোফোনের নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তির কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা আরও বড় ক্ষতি।

এনইআইআর ব্যবস্থার মাধ্যমে মুঠোফোনের একটি তথ্যভান্ডার তৈরি হয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি রোধ করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চাইলে বৈধ-অবৈধ ফোন সম্পর্কে বিটিআরসি তথ্য দিতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

নকল বা একই আইএমইআই নম্বরে থাকা একাধিক সেটের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সে বিষয়ে পরে জনভোগান্তি এড়িয়ে কী করা যায়, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিটিআরসি জানিয়েছিল, ১ অক্টোবর অবৈধ মুঠোফোন শনাক্তের ব্যবস্থা চালুর পরবর্তী তিন দিনে নেটওয়ার্কে নতুন করে সক্রিয় হয় ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫২টি মুঠোফোন। এর মধ্যে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৬১টির তথ্য বিটিআরসির তথ্যভান্ডারে ছিল না। এর মানে হলো, এসব ফোন হয় অবৈধভাবে আমদানি, অথবা প্রবাসীরা দেশে ফেরার সময় নিয়ে এসেছেন।

বাংলাদেশে গত আগস্ট মাস শেষে মুঠোফোন গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৮৬ লাখের কিছু বেশি। একজন গ্রাহক সর্বশেষ ৯০ দিনের মধ্যে একবার মুঠোফোন ব্যবহার করলে তাকে একজন গ্রাহক হিসেবে ধরা হয়। অবশ্য মোবাইল অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমের হিসেবে, দেশে ইউনিক ইউজার ৫৪ শতাংশ। ইউনিক ইউজারের ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির একাধিক সিম থাকলেও তাকে একজন গ্রাহক ধরে হিসাব করা হয়। বিটিআরসির হিসাবে, নেটওয়ার্কে সক্রিয় সেটের সংখ্যা ২৩ কোটির মতো।

দেশে একটি স্মার্টফোন আমদানিতে মোট করভার ৫৭ শতাংশ। ফলে বৈধভাবে আমদানি ও অবৈধভাবে আনা ফোনের দামের পার্থক্য অনেক বেশি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ৪১ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। ভারতে ৬৯, পাকিস্তানে ৫১, নেপালে ৫৩ ও শ্রীলঙ্কায় ৬০ শতাংশ মুঠোফোন ব্যবহারকারীর হাতে স্মার্টফোন রয়েছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষের ভোগান্তি হচ্ছিল, এটা ঠিক। সিদ্ধান্তও বাস্তবতা মেনে হয়েছে। তবে অবৈধ মুঠোফোন শনাক্তের ব্যবস্থাটি পর্যাপ্ত আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে, প্রভাব কী হতে পারে তা বিবেচনা করে এবং নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে হওয়া উচিত ছিল।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ