সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আকৃষ্ট করা হতো বেকার যুবকদের। এরপর রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১ হাজার ৫০ টাকা ও পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে সাড়ে ৭ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিতো তারা। তবুও চাকরি মিলতো না বেকারদের জীবনে।
অবশেষে নারায়ণগঞ্জে এই প্রতারক চক্রটি ধরা পড়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) জালে। বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে র্যাবের অভিযানে প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালানোর সময় রফিকুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম ও রায়হান নামে ৩ প্রতারককে আটক করা হয়। র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব অধিনায়ক জানান, মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়া এলাকায় প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠান এন.আর.এস ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লি.-এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম (৩১) ও এমডি মো. সাইফুল ইসলাম (২৮)-কে প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৭০টি ভিজিটিং কার্ড, ২০টি চাকরি প্রত্যাশীর ফরম, ১টি সিল, অফিস শর্তাবলির ২০টি অঙ্গীকারনামা, ৩ জোড়া সিকিউরিটি ইউনিফর্ম ও ২টি আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে চাকরি-প্রত্যাশী ৮ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিনে র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন চাষাঢ়া তোলারাম কলেজ রোড এলাকায় অন্য প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠান এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লি.-এর অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লি.-এর চেয়ারম্যান মো. রায়হান (৩০)-কে গ্রেফতার করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানটিও অনলাইনে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল। এই সময় আসামির কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১টি সিল, ২০টি চাকরি প্রত্যাশীর স্বহস্তে পূরণ করা ভর্তি ফরম, ২টি এটিএম কার্ড, ৪টি টাকার রশিদ ও ৩টি আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়। গত ৬ মাসে এই প্রতিষ্ঠানটি ১২ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, ভুক্তভোগী রিয়াজুল, স্মৃতি আক্তার, রাব্বি, রাবেয়া জানান, তারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির জন্য আবেদন করেন। এরপর প্রথমে তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১ হাজার ৫০ টাকা রাখে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে সাড়ে ৭ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিলেও তাদের চাকরি দেয়নি প্রতারকরা।
র্যাব অধিনায়ক জানান, এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়া চলছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ