ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অ্যাপসে সুদের ব্যবসার অভিযোগ, গ্রেফতার ৫

প্রকাশনার সময়: ০৭ অক্টোবর ২০২১, ২২:২৯

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোডের পর প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে ঋণের আবেদন করলেই দেয়া হয় টাকা। বিভিন্ন চার্জ বাবদ অগ্রিম টাকা কেটে নেয়া হয়। সপ্তাহের ব্যবধানে অতিমাত্রায় সুদসহ আসল আদায় করা কয়েকটি অ্যাপসের সন্ধান পেয়েছে ডিবি।

অ্যাপসভিত্তিক ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের নামে অবৈধ এ সুদের ব্যবসা পরিচালনা করা পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, ইমানুয়্যাল এডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনূর আলম ওরফে রাজীব, শুভ গোমেজ ও মো. আকরাম।

মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডি, বনানী এবং মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারের পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, চক্রটি থালা, ক্যাশম্যান, আমার ক্যাশ, ক্যাশকাশ ও ক্যাশ ক্যাশ নামে কিছু অ্যাপস পরিচালনার মাধ্যমে জামানতবিহীন ঋণ দেয়ার নামে মাত্রাতিরিক্ত সুদের ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

এসব অ্যাপস চীন থেকে পরিচালিত হয়। কিছু চীনা নাগরিক বাংলাদেশিদের সহায়তায় এসব অ্যাপসের মাধ্যমে রমরমা সুদের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তারা।

ডিবি প্রধান হাফিজ বলেন, তারা মূলত অর্থ সংকটে থাকা স্বল্প আয়ের লোকজন এবং বেকার ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করে। গ্রাহকরা ঋণের আবেদন করার পর স্বল্প সুদের পরিবর্তে উচ্চহারে সুদ প্রদানের মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে।

ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহকরা বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত লিংকে ক্লিক করে কিংবা গুগল স্টোর হতে ওই অ্যাপসগুলো ডাউনলোড করেন। বিভিন্ন বিষয়ে পারমিশন দিলে অ্যাপসটি গ্রাহকের মোবাইলে ইনস্টল হয়ে যায়। এরপর গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর, পরিবারের অন্য সদস্যদের ফোন নম্বর ও তাদের ব্যক্তিগত তথ্যসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। চাহিদা অনুযায়ী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাত্রাতিরিক্ত প্রসেসিং ফি নিয়ে এবং উচ্চ হারে সুদ নির্ধারণ করে স্বল্প সময়ের জন্য ৩ থেকে ৭ দিনের জন্য ঋণ প্রদান করা হয়।

এসব অ্যাপসে ব্যক্তিগত তথ্য খোয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, চক্রটি সরকারি অনুমোদন ছাড়া থান্ডার লাইট টেকনোলজি লিমিটেড, নিউ ভিশন ফিনটেক লিমিটেড ও বেসিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নামে অ্যাপসভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিল। আইনগত অনুমোদন ছাড়াই তারা গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে।

গ্রাহকরা অ্যাপস ইনস্টল করার মাধ্যমে অজান্তে ক্যালেন্ডারের ইভেন্ট পড়া, মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণ, মোবাইলের কন্টাক্টস পড়াসহ মোবাইলের লাইভ লোকেশন নির্ণয়, ফোনের স্ট্যাটাস এবং তথ্য সংগ্রহ, ফোনে সংরক্ষিত মেসেজ পড়া, পরিবর্তন করার অনুমতি নিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের পারসোনাল ডাটা সিকিউরিটির চরম হুমকিতে পড়ে। আসামিদের ধানমন্ডি থানার একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেবে পুলিশ।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ