রাজধানীর গুলশানে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই'র পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অন্য মামলায় কারাগারে থাকা পিয়াসাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ রিমান্ড আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ অক্টোবর পিয়াশার উপস্থিতিতে শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পিয়াসার পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব হোসেন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনকে আসামি করে ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলা করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগ এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন আনভীরের বাবা আহাম্মদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা, স্ত্রী সাবরিনা, আনভীরের গার্লফ্রেন্ড সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মুনিয়ার বাড়ীওয়ালা ইব্রাহিম আহমেদ রিপন ও রিপনের স্ত্রী শারমিন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, মোসারাত জাহান (২১) মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। ঘটনাচক্রে ভুক্তভোগীর উপর আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের (৪২) চোখ পড়ে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মুনিয়াকে তার কলেজের হোস্টেল থেকে ২০১৯ সালের জুনে রাজধানীর বনানীতে ৬৫ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে আসে এবং ৭/৮ মাস তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে আসছিল।
গত ১ মার্চ পুনরায় বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মুনিয়াকে কুমিল্লা থেকে গুলশানে মাসিক এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে আনভীর। বাসায় একা রেখে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিয়ের প্রলোভনে তাকে ধর্ষণ করে। এতে মুনিয়া ২/৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে মুনিয়া আনভীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর গত ২৬ এপ্রিল দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মুনিয়াকে হত্যা করা হয়। পরে ওড়না পেঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা সাজানোর চেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ থাকে, এর আগে মুনিয়াকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আনভীরকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন নুসরাত জাহান। গত ১৯ জুলাই বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। গত ১৭ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করলেও গত ১৮ আগস্ট ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী নারাজির আবেদন নাকচ করে আসামি আনভীরকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ