ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

হঠাৎ টিসিবি চাল বিক্রি বন্ধ করায় বিপাকে কোটি পরিবার

প্রকাশনার সময়: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫

চলতি মাসে হঠাৎ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশর (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডের পণ্যতালিকা থেকে চাল বিক্রি বাদ দেয়া হয়েছে। এতে বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের এক কোটি পরিবার।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) টিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে কার্ডধারীরা দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় চাল কেনার জন্য বাজেট ছাড় না করায় খাদ্য অধিদফতর চাল সরবরাহ করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

খাদ্য অধিদফতরের সরবরাহ, বণ্টন ও বিতরণ বিভাগের পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, এটা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে সেভাবেই বাস্তবায়ন করা হয়। নির্দেশনা আসেনি, তাই সরবরাহ করা হয়নি।

টিসিবি সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নির্দেশনায় নিম্নআয়ের এক কোটি উপকারভোগী কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য চাল, মসুর ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি করে আসছিল টিসিবি। ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে টিসিবি প্রতি ফ্যামিলি কার্ডের বিপরীতে ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল সরবরাহ করে আসছিল। খাদ্য অধিদফতর এ চাল সরবরাহ করত।

এদিকে টিসিবির বিশেষ কর্মসূচি ট্রাকসেলও বন্ধ হয়ে গেছে। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রাকসেলে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। এখন তা বন্ধ রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে পুনরায় তা চালু হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, খাদ্য অধিদফতর প্রতি মাসে টিসিবিকে ৫০ হাজার টন চাল সরবরাহ করে। তবে এ বরাদ্দের জন্য খাদ্য অধিদফতর বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। ফলে খাদ্য অধিদফতর আর চাল সরবরাহ করতে পারছে না। চালের মূল্য পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় সরবরাহ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, চাল বিক্রি বন্ধ থাকলেও ভোজ্য তেল ও ডাল সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলতি মাসে এক কোটি উপকারভোগীর কাছে তিন পণ্য - চিনি, সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল বিক্রি শুরু করবে টিসিবি। তবে হাতে লেখা কার্ড পরিবর্তন করে স্মার্টকার্ড চালুর কারণে জানুয়ারি মাসে অন্তত ৩৭ লাখ কার্ডধারী টিসিবির কোনো পণ্যই পাবে না।

গত মঙ্গলবার টিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে কার্ডধারীরা দুই লিটার ভোজ্য তেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং এক কেজি চিনি কিনতে পারছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তর প্রতি মাসে টিসিবিকে ৫০ হাজার টন চাল সরবরাহ করে। তবে এ বরাদ্দের জন্য খাদ্য অধিদপ্তর বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই।

ফলে খাদ্য অধিদপ্তর আর চাল সরবরাহ করতে পারছে না। চালের মূল্য পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় সরবরাহ আপাতত স্থগিত রয়েছে।

চাহিদা মেটাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় খোলা বাজারে বিক্রির জন্য এক হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা এবং চাল আমদানির জন্য তিন হাজার ৩৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে মোটা চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪-৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৫০-৫৫ টাকা।

টিসিবি জানায়, বর্তমানে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি নিয়মিত থাকে। পাশাপাশি কখনো কখনো পেঁয়াজ ও চাল সরবরাহ করা হয়। রমজান মাসে যোগ হয় ছোলা ও খেজুর।

এতদিন ফ্যামিলি কার্ড হাতে লেখা ছিল। সরকার বর্তমানে স্মার্ট ডিজিটাল কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা জানান, ‘এখন পর্যন্ত ৫৭ লাখ গ্রাহক স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন। আরও ছয় লাখ কার্ড প্রস্তুত হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই এগুলো গ্রাহকদের হাতে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছি।’

তিনি আরও বলেন, এ ছয় লাখ কার্ড বিতরণ শেষ হলে সর্বোচ্চ ৬৩ লাখ গ্রাহক জানুয়ারি মাসে টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। বাকি ১৩ লাখ কার্ডধারীর এনআইডি ও অন্যান্য তথ্য যাচাই চলছে। যাচাই শেষে যোগ্য ব্যক্তিদের জন্য নতুন কার্ড ইস্যু করা হবে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ