ঢাকা, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬

রাতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, বিমানবন্দরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা

প্রকাশনার সময়: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৪

অবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন তিনি। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ সুবিধা সংবলিত কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ছয় চিকিৎসক, নার্স, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৫ জন এই সফরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন। যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর পর মা ও ছেলের দেখা হচ্ছে। হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, লন্ডন ক্লিনিক বলে একটা পুরোনো ঐতিহ্যবাহী হাসপাতাল আছে। সেই হাসপাতালের এনএইচএসের অধীনের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হবে। হিথ্রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে তাকে সরাসরি সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই চিকিৎসাধীন থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

তার একান্ত সচিব এবি এম আব্দুস সাত্তার জানান, রাত ৮টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বের হবেন খালেদা জিয়া। রাত ৯টায় বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবেন।

জানা গেছে, খালেদার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. মো. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুর উদ্দিন আহমদ ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন তার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান। দলীয় নেতাদের মধ্যে রয়েছেন তার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, ব্যক্তিগত সহকারী মো. মাসুদুর রহমান, প্রটোকল অফিসার এসএম পারভেজ এবং গৃহকর্মী ফাতিমা বেগম ও রূপা শিকদার।

এদিকে লন্ডনে দীর্ঘ আট বছর পর বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হতে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ ছেলেকে স্বশরীরে সামনে পেয়েছিলেন মা খালেদা জিয়া। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাজকীয় আমন্ত্রণে সপরিবারে ওমরা পালন করেছিলেন তারা। এরপর আট বছর কেটে গেছে। এই সময়ের মধ্যে আর কখনো তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়নি খালেদা জিয়ার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগও পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। ফলে এই আট বছরে দেশের বাইরে কোথাও তার যাওয়া হয়নি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুর্নীতির দুই মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তাই দেশে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা চলছিল।

অবশেষে বিদেশ যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেয়া হবে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। এর মধ্যদিয়ে আট বছর পর সাক্ষাৎ ঘটবে মা-ছেলের।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ