জরিপ সংস্থা ইউএস সেন্সাস ব্যুরো প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, নতুন বছরের প্রথম দিনে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৮০৯ কোটি হতে পারে। সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) জরিপ সংস্থাটি জানায়, এ বছর বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিলো ০.৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের চেয়ে সামান্য কম।
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে জন্মহার ছিল কম। ইউএস সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী,
বর্তমানে জন্মহার এবং মৃত্যুহারের যে চিত্র, তাতে ২০২৫ সালের প্রতি সেকেন্ড গড়ে ৪ দশমিক ২ জন শিশু জন্ম নেবে এবং ২ জনের মৃত্যু ঘটবে বলে ধারণা করছে ইউএস সেন্সাস ব্যুরো। বিবৃতিতে সে তথ্য উল্লেখও করা হয়েছে।
তবে এই গড় হিসাবে তারতম্যও হতে পারে। কারণ জনসংখ্যা বিষয়ক বিভিন্ন বৈশ্বিক জরিপ বলছে বছরের ১২ মাসের প্রতিটিতে বৈশ্বিক জন্মহার ও মৃত্যুহারের চিত্র বদলে যায়। এই ব্যাপারটিকে হিসাবে ধরা হলে প্রতি মাসের জন্ম ও মৃত্যুহারের রেকর্ড রাখা জরুরি।সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্বজুড়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪ দশমিক ২টি শিশুর জন্ম এবং ২টি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
২০২০ সালের পর ২.৯ শতাংশ হারে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিলো প্রায় ৯৭ লাখ। ২০১০ এর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিলো ৭.৪ শতাংশ, যা ১৯৩০-এর দশকের পর সর্বনিম্ন।এদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও বই ছাপার কাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বই ছাপাও শেষ করা সম্ভব হয়নি। ফলে নতুন বই হাতে পেতে আরও অন্তত একমাস অপেক্ষা করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
এ ব্যাপারে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে ঘটা করে বই উৎসব করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। এবার অনলাইনে এ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর সব স্কুলে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।
এবার বই ছাপানোর কাজ দেরিতে শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তাছাড়া হঠাৎ শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আসায় সংশোধন-পরিমার্জন করতে হয়েছে পাঁচ শতাধিক বই। এ কারণে বিগত বছরগুলোর মতো এবার বছরের প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারছে না সরকার।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৩ জন। তাদের জন্য ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই। প্রাথমিকের ২ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই।
মাধ্যমিক পর্যায়ের ২ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। এছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ছাপা হচ্ছে সাড়ে ৮ হাজারের বেশি ব্রেইল বই। শিক্ষকদের জন্য ছাপা হবে প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা।
এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৬ লাখ বই ছাপানো হয়েছে। যার মধ্যে প্রাথমিকের পাঁচটি শ্রেণির জন্য ছাপানো হয়েছে ৩ কোটি ৯৮ লাখ। এছাড়া মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির জন্য ছাপানো হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ বই। প্রাথমিকভাবে দু-একদিনের মধ্যে ৬ কোটি বই বিতরণের চেষ্টা করছে এনসিটিবি।
মাধ্যমিক ও মাদরাসার ইবতেদায়ির জন্য ছাপা ২ কোটি ৮ লাখ বইয়ের বেশিরভাগই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির। এ দুই শ্রেণির দুটি বা তিনটি করে বই ৩২৩ উপজেলায় বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরের মধ্যে পৌঁছে দিতে কাজ করছে এনসিটিবি। এছাড়া দশম শ্রেণির কিছু বই ৩৮ জেলায় দিতে পারছে সংস্থাটি। অষ্টম ও নবম শ্রেণির কোনো বই ছাপা শেষ হয়নি এখনও। তাই বছরের প্রথমদিনে সেগুলো স্কুলে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান বলেন, দশম শ্রেণির জন্য সাধারণত বই ছাপানো হয় না। নবম ও দশম শ্রেণিতে একই বই পড়ানো হয়। তবে এবার নবম থেকে দশমে ওঠা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম ও নিয়মে পরিবর্তন আসায় তাদের জন্যও বই দিতে হচ্ছে।
দশম শ্রেণির জন্য প্রায় ৫ কোটি বই ছাপা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দশম শ্রেণির বইগুলো অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ছাপার কাজ চলছে। তবে এ পর্যন্ত খুব বেশি বই ছাপানো যায়নি। এক কোটির মতো বই ছাপানো হয়েছে, সেগুলো ৩৮ জেলায় পাঠানো হয়েছে। বাকি বইগুলো ১৫ জানুয়ারির মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাধ্যমিকের চেয়ে প্রাথমিকের বই বেশি উপজেলায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। প্রায় ৪০০ উপজেলায় প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির তিনটি করে বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দুটি বা তিনটি করে বই মাত্র ৯ থেকে ১০টি উপজেলায় যেতে পারে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, সব উপজেলায় আমরা কিছু না কিছু বই পাঠাচ্ছি। সব স্কুলেও কিছু না কিছু বই পাঠানো হয়েছে। বই একেবারে যায়নি এমন উপজেলা ও স্কুল থাকবে না। হয়তো সব শ্রেণির সব শিক্ষার্থী প্রথমদিনে বই হাতে পাবে না। তবে অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেব।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ