চাঁদপুরের মেঘনায় সারবোঝাই কার্গো জাহাজ এমভি আল-বাখেরার সাত কর্মীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নৌপুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। এসময় আদালত শুনানি শেষে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে উপস্থিত সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর শরীফ মাহমুদ সায়েম সাংবাদিকদের বলেন, ‘একসঙ্গে সাতজনকে হত্যার প্রকৃত কারণ এবং এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে মূল ঘটনা বের করার জন্য আদালতের মাধ্যমে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানানো হয়।’
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় কুমিল্লা থেকে র্যাব সদস্যরা তাদের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইরফানকে চাঁদপুরে নৌপুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে চাঁদপুরে হাইমচরের মেঘনা নদী থেকে কার্গো জাহাজ এমভি আল-বাখেরার মোট ৮ কর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে সাতজনকে মৃত এবং একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ।
এদিকে, ঘটনার একদিন পর চাঁদপুরে নৌপুলিশের হরিণা ফেরিঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কালাম বাদী হয়ে হাইমচর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে র্যাব-১১ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেনের নেতৃত্বে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে (৩০) গ্রেফতার করে। তিনি একই জেলার ফকিরহাটের জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। ইরফান ওই জাহাজের খালাসি ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বলেন, নানা ধরনের বৈষম্যের কারণে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের মাস্টার কিবরিয়ার ওপর ক্ষোভ ছিল তার। সেই থেকে প্রথমে মাস্টার কিবরিয়াকে হত্যার পর অন্যদেরও হত্যা করেন তিনি। তবে কেবল গলার শ্বাসনালিতে আঘাত পেয়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান জুয়েল নামে একজন। আর যে সাতজন মারা যান; তাদের দুই জনের বাড়ি মাগুরা, দুই জনের নড়াইল, দুই জনের ফরিদপুর এবং একজনের মুন্সিগঞ্জে। উল্লেখ্য, ২২ ডিসেম্বর (রোববার) সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানার জেটি থেকে ইউরিয়া সার বোঝাই করে জাহাজটি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি যাচ্ছিল। এতে ইরফানসহ মোট ৯ জন কর্মী ছিলেন। ২৩ ডিসেম্বর (সোমবার) বিকেলে সেখানে জাহাজটি পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে নির্মম এবং আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনা ঘটে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ