ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

‘বঙ্গবন্ধুর মতো জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে’

প্রকাশনার সময়: ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১৩:১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের প্রকৃত সেবক হিসেবে কাজ করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার ১১৯তম এবং ১২০তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী এবং সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সনদপ্রাপ্ত সবাইকে অভিনন্দন জানান সরকার প্রধান। সেই সঙ্গে বিচারের বাণী যাতে নিভৃতে না কাঁদে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা।...প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে আপনাদের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কাজ করতে হবে জনগণের জন্য। জনগণের সেবক হিসেবে।’

এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে এই হচ্ছে আমার জীবনের স্বপ্ন। এই অল্প কথার মাধ্যমে এটা প্রতীয়মান হয় যে, তিনি কী কারণে সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছেন।

‘মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি প্রদেশ ছিল বাংলাদেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও সকল সুবিধা থেকে ছিল বঞ্চিত। স্বাধীনতার পর তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেন। যেখানে একটি টাকাও রিজার্ভ মানি ছিল না। কোনো খাদ্য ছিল না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেইভাবেই কিন্তু শূন্য থেকে যাত্রা শুরু। বঙ্গবন্ধু একদিক থেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলেন, অন্যদিকে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের কাজ করেন।’

বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ ভাষণের লাইন তুলে ধরে তার জ্যেষ্ঠকন্যা বলেন, ‘আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয় এই গরিব কৃষক, আপনের মাইনে দেয় এই গরিব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ওই টাকায়, আমি গাড়ি চলি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন, ওরাই মালিক।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। আমাদের সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদেও এই কথা বলা আছে। কাজেই সেই শিক্ষাটাই তিনি দিতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ২১ এর ২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি সরকারি কর্মচারী সার্বক্ষণিকভাবে জনগণের সেবা প্রদানে বাধ্য।’

প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে জনগণের সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করবেন।

‘বিচারের বাণী যাতে নিভৃতে না কাঁদে’

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে প্রশাসনে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় নবীন কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন। অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সময় উপযোগী প্রশাসন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সরকার প্রধান বলেন, ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আপনারা নিবেদিত থাকবেন। জনগণের পাশে থাকবেন। মানুষ যেন ন্যায় বিচার পায় সেটা নিশ্চিত করবেন।

‘আমরা আর একটা জিনিস করেছি, ভার্চুয়াল কোর্ট। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের সেবা করা, বিচার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা। বিচারের বাণী যাতে নিভৃতে না কাঁদে। আমি সেটার ভুক্তভোগী।’

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যা করার পর যারা খুনি তাদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইন্ডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। বিচারের হাত থেকে তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিল। আমরা যারা বাবা মা ভাই হারিয়েছি আমাদের তো অধিকার ছিল না একটা মামলা করা বা বিচার চাওয়ার।

‘১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেই পথ খুলেছি। বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আর যে যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। তবে ৭৫ এর পর আবার তাদেরকে ক্ষমতায় আনা হয়েছিল এবং খুনিদেরকেও জনগণের ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসানো হয়। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা বিচার শুরু করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই সেই বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে, মানুষজন যেন ন্যায় বিচার পায়। মানুষ যাতে প্রশাসনের সেবাটা পায়। কারণ আমি আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। আমি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী না জনগণের সেবক হিসেবে দেখি। আপনাদের কাছেও আমি সেটাই চাই।’

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ