দুর্নীতির মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসে ফিরে গেছেন।
লাইসেন্স নবায়নবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা এবং করোনার নমুনা পরীক্ষায় দুর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করতে আসেন তিনি। আদালতে আত্মসমর্পণের আবেদনও জমা দেন।
কিন্তু বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ এদিন অন্যান্য মামলার শুনানি নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকায় এই মামলার শুনানি গ্রহণ করতে সময় দিতে পারবেন না জানান। ফলে আইনজীবীরা আবেদনটি তুলে নিয়ে যান এবং অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদও ফিরে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক প্রসিকিউরটর জানান, আদালত মঙ্গলবার ব্যস্ত থাকায় আগামী বৃহস্পতিবার তাকে (মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ) আত্মসমর্পণের জন্য আসতে বলেছেন।
মামলাটিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আবুল কালাম আজাদ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।চার্জশিটভূক্ত অপর চার আসামি হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসামি সাহেদ করিমের লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অনুমতি দিয়েছেন। যেখান থেকে আসামিরা অবৈধ পারিতোষিক বাবদ রোগী প্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন।
এ ছাড়া চার্জশিটে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরাসহ সমঝোতা স্মরকের খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ ( ২ ) ধারায় শাস্তিযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর আসামি আবুল কালাম আজাদ ছাড়া অপরদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। তদন্তের আবুল কালাম আজাদের নাম আসায় তাকে চার্জশিট ভুক্ত করা হয়েছে। সাহেদ করিম বর্তমানে অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
করোনা টেস্ট না করে ভুয়া রিপোর্ট ও ভুয়া নেগেটিভ ও পজিটিভ সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়। ওই অস্ত্র মামলায় গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ