আগামী বছর ২০২৫ সালে বিভিন্ন সরকারি ছুটি ও দুদিন ব্যাংক ছুটিসহ দেশের ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো মোট ২৭ দিন বন্ধ থাকবে। তবে এই ২৭ দিনের মধ্যে আট দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে।
সরকারি ছুটি ছাড়াই ১ জুলাই ও ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংক ছুটি উপলক্ষ্যে গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর লেনদেন বন্ধ থাকবে। তবে ওই দুদিন ব্যাংক চলবে অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক হিসাব হিকাশ করার জন্য।
এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারি ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর জন্য আগামী বছরের ছুটির এই তালিকা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছর ব্যাংকে ছুটি ছিল ২৪ দিন। আগামী বছর থেকে ঈদের ছুটি বাড়ানোর কারণে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর ছুটিও বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকা অনুযায়ী, আগামী বছর প্রথম সরকারি ছুটির দিনটি হবে শবেবরাতে। এ উপলক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার একদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। ওই মাসে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার একদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ২৬ মার্চ বুধবার, জুমাতুল বিদা ও শবেকদর উপলক্ষ্যে ২৮ মার্চ শুক্রবার ছুটি থাকবে।
আগামী বছরের পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে এক দিন সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে। ঈদুল ফিতরের আগের দুই দিন, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দুই দিন ব্যাংক বন্ধ রাখা হবে।
নববর্ষ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল সোমবার, মে দিবস উপলক্ষে ১ মে বৃহস্পতিবার ও বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে ১১ মে রোববার ব্যাংক বন্ধ থাকবে। আগামী বছরের বছরের ৫ থেকে ১০ জুন এ ছয় দিন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে।
এ ছাড়া ১ জুলাই মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে উপলক্ষে এক দিন, আশুরা উপলক্ষে ৬ জুলাই রোববার, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ১৬ আগস্ট শনিবার, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১ ও ২ অক্টোবর (বুধ ও বৃহস্পতিবার) দুই দিন, বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার, বড়দিন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ও ব্যাংক হলিডে উপলক্ষে ৩১ ডিসেম্বর বুধবার ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
আগে ঈদের ছুটি থাকতো তিন দিন। নতুন অন্তবর্তী সরকার ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ঈদুল ফিতরের ছুটি পাচ দিন ও ঈদুল আজহার ছুটি ছয় দিন করেছে। এছাড়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগে এক দিন ছুটি থাকতো। আগামী বছর থেকে তা বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়েছে।
গত বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট ছুটি ছিল। এসব ছুটি সরকারের নির্বাহী আদেশে নতুন সরকার বাতিল করেছে।
আলেঅচ্য ছুটির মধ্যে শবে বরাত, শবে কদর, ঈদুল ফিতর, বুদ্ধপূর্ণিমা, ঈদুল আজহা, আশুরা ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর ছুটি নির্ভর করবে চাঁদ দেখার ওপর। ফলে এসব ছুটির দিন ক্ষণ পরিবর্তন হতে পারে।
আগামী বছরের জন্য সরকারি যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে কিছু ছুটি পড়েছে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ও শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার। ফলে এসব ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। তাতে লম্বা ছুটির সুযোগ পাবেন ব্যাংকের কর্মীরাও। সরকারি যেসব ছুটি রবি ও বৃহস্পতিবার পড়েছে, তার সঙ্গে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে তিন দিন ছুটি ভোগ করতে পারবেন তারা। সেই হিসাবে ব্যাংকাররা আগামী বছর টানা তিন দিনের ছুটি পাবেন মে দিবস, বুদ্ধপূর্ণিমা, আশুরা ও বড়দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে। আর দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করেও চার দিনের ছুটি পাবেন তারা।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, ছুটির তালিকা লম্বা হলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ও রপ্তানির গতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে লম্বা ছুটির মধ্যে কিছু দিন সীমিত সময়ের জন্য ব্যাংক খোলা রাখা হতে পারে। যেটি আগেও হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/ইএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ