ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

দাম নিয়ন্ত্রণে সবজি পরিবহন করবে ট্রেন

প্রকাশনার সময়: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৩৫

দেশজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। শাক-সবজি, মাছ, ডিমসহ কৃষিপণ্যের বাজারও চড়া। অন্তর্বর্তী সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সড়কপথে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে ১৫টি উৎপাদক অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫টি অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ট্রেনে করে চাহিদাসম্পন্ন এলাকায় পৌঁছে দেয়া হবে। ছয়টি নিয়মিত দ্বিতীয় শ্রেণীর ট্রেনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি, ফলমূল, মাছ, ডিমসহ সব ধরনের কৃষিপণ্য সরবরাহ শুরু করবে রেলওয়ে। এসব ট্রেনে লাগেজ ভ্যান সংযোজন করতে নির্দেশ দিয়েছে পূর্বাঞ্চলের রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ। ট্রেনগুলো হলো ঢাকা মেইল (নং-১), চট্টগ্রাম মেইল (নং-২), নোয়াখালী এক্সপ্রেস (১২), ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (৩৭), ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (৩৮) ও ভাওয়াল এক্সপ্রেস (৫৬)। চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে কৃষিপণ্য সরবরাহের জন্য বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষিপণ্যের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ১৫ অক্টোবর রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন ও বাণিজ্যিক বিভাগকে কৃষিপণ্য বিশেষত শাক-সবজি, মাছ, ডিম ও মৌসুমি ফল পরিবহনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এরপর গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ থেকে ১৫টি উৎপাদক অঞ্চলের কৃষিপণ্য ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টারকে স্থানীয় উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য পরিবহন কার্যক্রমের আওতা বাড়াতে বলা হয়েছে।

রেলওয়ের এ-সংক্রান্ত নথিপত্র থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে ঢাকা মেইল। একই পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে চট্টগ্রাম মেইল। এ রুটের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিশেষ ব্যবস্থায় লাগেজ ভ্যানে করে উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের পছন্দসই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

এছাড়া নোয়াখালী এক্সপ্রেস (১২) ঢাকা থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (৩৭) চট্টগ্রাম থেকে ভূঞাপুর, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (৩৮) ভূঞাপুর থেকে চট্টগ্রাম এবং ভাওয়াল এক্সপ্রেস (৫৬) দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট সেকশনের একাধিক লোকাল ট্রেন স্থানীয় এলাকাগুলো থেকে সবজিজাতীয় পণ্য সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম শহরে সরবরাহের ব্যবস্থা করবে।

জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সারা দেশে সবজি জাতীয় পণ্যের চাহিদা থাকলেও পরিবহন জটিলতায় স্থানভেদে দামের পার্থক্য হয়। রেলওয়ে স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য দেশব্যাপী সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ছাড়াও দেশব্যাপী কৃষিপণ্যের সরবরাহ কিছুটা হলেও স্থিতিশীল হবে।’

নয়াশতাব্দী/ইএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ