সম্প্রতি দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানীতে ছিনতাই, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে অহরহ। থানার বাইরে মাঠপুলিশের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। রাস্তায় পুলিশের তেমন টহল নেই। রাতের সড়ক অনেকটাই নিরাপত্তাহীন। সেই সুযোগে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা বাড়ছে। ফাঁকা ঢাকায় কোনো রকম ভয়ভীতি ছাড়াই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে অপরাধীরা। অপরাধ দমনে তেমন শক্ত কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করছেন না সাধারণ মানুষ।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক মিরপুরের বাসিন্দা বলেছেন, দিনে রাতে কোনো সময় বাইরে নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না। অলিতে গলিতে চলাচল করতে গেলে মনে আতঙ্ক নিয়ে চলতে হচ্ছে। রাতে বাসায় নিরাপদ বোধ করছি না। দিপ্ত টিভির সাংবাদিক হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, দখলদারির জন্য দিনে দুপুরে বাসায় এসে মারধর করে একজন সাংবাদিককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। তার মানে বাসার ভেতরেও নিরাপত্তা নেই।
এদিকে রাস্তার ট্রাফিকের বেহাল দশা নিয়ে রাজধানীর বনশ্রী এলাকার এক বাসিন্দা নয়া শতাব্দীকে বলেন, রাস্তার ট্রাফিক জ্যাম দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। আধা ঘণ্টার রাস্তা যেতে সময় লাগছে দেড় ঘণ্টা। কিছু কিছু জায়গায় মূল সড়কে অটোরিকশা এখনো চলছে। আরও একটি বড় সমস্যা হচ্ছে বাসগুলোর যেখানে সেখানে থামিয়ে লোক নামানো এবং উঠানো। রাস্তায় যারা চালক আছেন, তারা যদি অন্যের অসুবিধার কথা ভেবে রাস্তায় গাড়ি চালায় তাহলে এ সমস্যা কিছুটা কমতে পারে। তার পরেও ট্রাফিক পুলিশকে আরও শক্ত হতে হবে। নিয়ম ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনতে হবে।
পাশাপাশি রাস্তার অবকাঠামো নিয়েও তিনি আরও বলেন, ঢাকার অনেক রাস্তা ভাঙা, রাস্তার মধ্যে ফাটল, বড় বড় গর্ত। ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রতিদিনই হচ্ছে, তবে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় জনপ্রশাসনের তেমন কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করছেন না সাধারণ জনগণ। দায় ছাড়া ভাব নিয়ে চলছে ঢাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য সাধারণ জনগনের ক্রয়সীমার অনেক উরধে এখন। এ বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও জনমনে সস্তি ফেরাতে পারেনি এখনো। আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে, সৎভাবে সব কার্যক্রম মনিটর হবে এবং দেশের মানুষের কাছে সেটির আপডেট দিবে।এভাবে বলতে বলতে চরম হতাশা প্রকাশ করলেন তিনি। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হচ্ছে না? দুর্নীতি অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিচারের আওতায় আনতে না পারলে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে মনে করেন অনেকেই।
কেউ কেউ বলছেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর থেকে এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পুলিশ। বড় বড় জায়গায় ব্যাপক রদবদল করেও কাজ হচ্ছে না। কিন্তু অতি দ্রুত রাস্তাঘাট এবং বাসাবাড়িতে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা খুব জরুরি।
স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর এখনো যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে তারা এ দেশের জন্য অভিশাপ। তাদের শক্ত হাতে নির্মূল করার জোর দাবি করছে সাধারণ জনগণ।নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ