ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের দুই মাস আজ। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক এ পট পরিবর্তনের দগদগে স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি এবং আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার ১ হাজারের বেশি মানুষ। চোখের আলো নিভে গেছে ৪০০ জনের। শরীরে বুলেটের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন শত শত মানুষ।
ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৮ আগস্ট দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করেন।
ড. ইউনূসের দায়িত্বভার গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশ চার দিনের নেতৃত্বশূন্য পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিস্থিতি। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ এবং দমনপীড়নের কারণে ভেঙে পড়েছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। সেটি স্বাভাবিক করতে আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। পুলিশ প্রশাসনে এসেছে বড় রদবদল।
এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই ড. ইউনূস গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলোতে বড় আকারে সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতিবিদকে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ দিয়েছেন, যাতে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেন। একই সঙ্গে ড. ইউনূস আরেকজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদকে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলের সুবিস্তৃত দুর্নীতি বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। অর্থনীতিতে এখনো নানা সমস্যা থাকলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
এছাড়া পররাষ্ট্রনীতিতেও নিয়েছেন বেশকিছু সাহসী ভূমিকা। দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের পাশাপাশি নিয়েছেন বেশকিছু পদক্ষেপ। বৈঠক করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে। এ ছাড়া আইন-আদালত, গণমাধ্যম, দুদক, অর্থনীতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব অনুষঙ্গকে সংস্কার করতেও বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ