আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিগত বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বড় আয়োজনে শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করত। তবে এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এসেছে তার জন্মদিন।
গত প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকাকালে সাধারণত শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে থাকতেন তার জন্মদিনে। সেখানেই নেতাকর্মীদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটতেন।
এছাড়া থাকত নানা আয়োজন। দেশেও আওয়ামী লীগ পালন করত নানা আনুষ্ঠানিকতা। তবে এবারের জন্মদিনের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা এখনো সেখানেই রয়েছেন। দলের নেতাকর্মীরাও বেশির পালিয়ে কিংবা আত্মগোপনে আছেন। আওয়ামী লীগ অনেকটা ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছে। ফলে কোথাও আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্মদিনের কোনো আয়োজনের খবর পাওয়া যায়নি।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বড় সন্তান। তিনি ঢাকার আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। তিনি সেখানে অবস্থানকালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার পরিস্থিতি না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরেরই ১৭ মে ছয় বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। টানা চার মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি স্বৈরাচারী শাসকের খেতাব পান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ