ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নয় মাসে ১৫৪ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার

প্রকাশনার সময়: ০১ অক্টোবর ২০২১, ২১:২১

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নয় মাসে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়াসহ নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৫৪ সাংবাদিক।

এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও ‘ক্রসফায়ারে’ মোট ৪৮ জন মারা গেছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা পর্যালোচনা করে আজ শুক্রবার আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসকের নিজস্ব সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

আসকের প্রতিবেদনে নারী শিশু নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং ১৫৪ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।

নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটজন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মীদের দ্বারা ১৪ জন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৩ জন, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের ডাকা হরতালে ১৩ জন সাংবাদিক আহত হন। এ ছাড়া ১০৬ জন সাংবাদিক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে আসক। এতে বলা হয়, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে এবং ‘ক্রসফায়ারে’ মোট ৪৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘ক্রসফায়ার’, বন্দুকযুদ্ধ, গুলিবিনিময় বা এনকাউন্টারে’ নিহত হয়েছেন ৩৪ জন, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৯ জন ও নির্যাতনে চার জন মারা গেছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তারের পরে হার্ট অ্যাটাকে (পুলিশের ভাষ্যমতে) এক জনের মৃত্যু হয়।

এ ছাড়া কারা হেফাজতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, নয় মাসে কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা যান ৬৭ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৫ জন এবং হাজতি ৪২ জন। দেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে জানা যায়, গত নয় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ বা গুমের শিকার হন ছয় জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে তিন জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩ জন।

এদিকে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ২০২০ সালের নয় মাসের তুলনায় বেড়েছে।

এই সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০৮৫ নারী, যার মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার হন ৮৭৯ জন এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ২০৩ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩৯ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৮ নারী। এছাড়া ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫৬টি। উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে মোট ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ৯৭৫ নারী।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, নয়মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১০১ নারী, এর মধ্যে ১০ নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ নারী। এ ছাড়া যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন পুরুষ, যার মধ্যে ৪ জন পুরুষ খুন হয়েছেন।

এ ছাড়া যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতন ও হত্যা, গৃহকর্মী নির্যাতন ও হত্যা, শিশু নির্যাতন ও হত্যা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত ও রাজনৈতিক সংঘাতের ব্যাপারে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে আসক।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ