ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘যোগ্য’ কর্মকর্তার খোঁজে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

প্রকাশনার সময়: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১১

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের এক মাস হয়ে গেলেও খালি পড়ে আছে সচিব ও সচিব পদমর্যাদার ছয়টি পদ। এ ছাড়া আরো দুইটি পদ ২৩ ও ১০ দিন ধরে খালি পড়ে আছে। সব মিলিয়ে আট সচিবের পদ খালি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, যোগ্য কর্মকর্তা খুঁজে না পাওয়ায় এসব পদে এখনো নিয়োগ দিতে পারছে না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার তিন দিন পর ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সব সচিবকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় এ সরকার। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনেকগুলো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগগুলো বাতিল করা হয়। এ ছাড়া কোনো কোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বা বদলি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পদক্ষেপের ফলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের পদ খালি রয়েছে। এ তালিকায় আরো রয়েছে- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা), জাতীয় সংসদ সচিবালয়, পরিকল্পনা কমিশনের একটি সদস্য (কার্যক্রম বিভাগ) এবং বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের (বিইপিআরসি) চেয়ারম্যানের (সচিব) পদ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সচিব পদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ পদে বসানোর ক্ষেত্রে অনেক কিছুই দেখা হচ্ছে। প্রশাসনে দলীয়করণ করার কারণে এখন নিরপেক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে শিগগিরিই খালি পদে নিয়োগ দেয়া হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ১৪ আগস্ট চুক্তি ভিত্তিতে থাকা ১১ জন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি পদে নিয়োগ হলেও খালি পড়ে আছে ছয়টি পদ।

পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও বাতিল করা হয় গত ১৪ আগস্ট। এরপর থেকে এ বিভাগের সচিবের পদ খালি রয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান পদটি শূন্য রয়েছে। এ পদটি সচিব পদমর্যাদার। এ পদে থাকা লোকমান হোসেন মিয়ার চুক্তিও গত ১৪ আগস্ট বাতিল করা হয়। একই দিন বাতিল হয় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালামের নিয়োগ। সেই থেকে এ পদটিও খালি।

গত ১৪ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান করা হয়। সেই থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগের সচিবের পদ শূন্য রয়েছে। একই দিন বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের (বিইপিআরসি) চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেনকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। সেই থেকেই পদটি খালি রয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আব্দুল বাকীকে গত ২০ আগস্ট রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরপর এ পদে আর কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে ফাঁকাই পড়ে আছে পদটি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামালকে গত ২ সেপ্টেম্বর ওএসডি করা হয়। এরপর এ পদে আর কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, আমরা অনেক কিছু চাচ্ছি। যোগ্য কর্মকর্তা পাওয়া দুরূহ হয়ে গেছে! বয়স বাড়ছে চাহিদাও বাড়ছে, এটা চাই, সেটা চাই। কিন্তু আমরা ফর্মুলা মোতাবেক যেটা চাচ্ছি, সেই কর্মকর্তারা খুবই কম। তবে এর মধ্য থেকেই কাউকে না কাউকে দিতে হবে। শিগগিরই খালি পদগুলোতে নিয়োগ দেয়া হবে। খালি থাকা সচিব পদগুলোতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলেও জানিয়েছেন এ সিনিয়র সচিব। তিনি বলেন, যারা অতিরিক্ত সচিব আছেন তাদের পদোন্নতি দিয়ে কিংবা রানিং যারা (সচিব) আছেন, তাদের রদবদল করে শূন্য পদ পূরণ করা হবে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ