ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় ফারাক্কা বাঁধের ১০৯ গেটের সবগুলো খুলে দিয়েছে ভারত। ফেনীসহ পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতির ক্ষত না শুকাতেই প্রতিবেশীর এ আচরণে দেশবাসী চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে৷ বড় বন্যা শঙ্কা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা পরিণত হয়েছে টক অব দি কান্ট্রিতে।
তবে আপাতত সে শঙ্কার কথা উড়িয়ে দিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।সরকারি এ সংস্থার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের সময়টা ওদের (ভারত) জন্য পিক সময়। এ সময় প্রতিবছরই সবগুলো গেট খুলে দেয় তারা। এবার ‘ওপেন ফ্লো’ মানে পানির বাধাহীন প্রবাহ রয়েছে। ওদের ওখানে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কায় সবগুলে গেট খুলে দিয়েছে।
ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দিলেও মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত এপারে গঙ্গা বেসিনে পানির সমতল ৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এরপর থেকে স্থিতিশীল আছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। তিন, চার, পাঁচদিনে বড় বানের কোনো আশংকা নেই।
তিনি বলেন, উজান (ভারত) থেকে নেমে আসা পানির প্রভাব রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ এসব এলাকায় পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এক পূর্বাভাসে পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা আগামী দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় প্রতিদিন ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে নেমে আছে। এতে এখনো পানির সমতল গঙ্গায় বিপদসীমার দুই মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই অর্থে খুব বাড়ছে বলে জানান সরদার উদয় রায়হান।এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানিও কমছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে আগের) পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে পূর্বাঞ্চলীয় জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।
নয়াশতাব্দী/ইএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ