ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশনার সময়: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৭ | আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫২

বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষকে গুম করে এক ভীতিকর রাষ্ট্র তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা। শুধু জীবিত নয় শত শত লাশ ঘুম করেছিল হাসিনা সরকার। যা পরিচিতি পায় ‘আয়নাঘর’ নামে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানালেও এ মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ন্যায়বিচার পাননি। এ পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে গুমবিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার তাগিদ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা এড়িয়ে যাচ্ছিল। তবে আগামী ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুমবিরোধী দিবসের আগেই বাংলাদেশ গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো শর্ত ছাড়াই ওই সনদে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ঢাকা ও নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গুমবিরোধী সনদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে দেবে বাংলাদেশ। সনদটি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের, তাই পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব চিঠিটি জেনেভায় মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরে পাঠাবেন।

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার মতামতের ভিত্তিতে কোনো আপত্তি ছাড়াই গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে সরকারি সংস্থা কর্তৃক বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’। ‘মায়ের ডাক’-এর তথ্যমতে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ৭ শতাধিক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। অনেকে প্রাণে বাঁচলেও এখনও দেড় শতাধিকের খোঁজ মিলছে না।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হয়েছে। এই সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এই সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া।

রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যেই গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত। সনদ সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক নয়টি সনদের আটটিতে সই করেছে। কিন্তু সনদে সমর্থন করেনি।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ