ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দুর্যোগে আস্থায় আস-সুন্নাহ

প্রকাশনার সময়: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২১

দুর্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। বিশ্ব ওলট-পালট করা করোনাকাল থেকে বর্তমান বন্যা পর্যন্ত সব দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নিজেকে নিয়ে গেছে আস্থার অনন্য উচ্চতায়। গত চার বছরে জাতীয় দুর্যোগে একদিকে সহায়তায় যেমন এগিয়ে এসেছে আস-সুন্নাহ অন্যদিকে দুর্গত অঞ্চলে ছুটে গেছেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। দেশের জনপ্রিয় এই ইসলামিক স্কলার সব ব্যস্ততা ফেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে চলেছেন বর্তমানে বন্যাকবলিত এলাকার বিপৎগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ নিয়ে। খরা মৌসুমে তীব্র রোদে পুড়ে মঙ্গাপীড়িত উত্তরের জেলাগুলোর দুর্গম চরাঞ্চলে গিয়ে গড়ে দিয়েছেন বাড়ি।

করোনা অতিমারির সময় সংগঠনটির দাতব্য কার্যক্রম প্রশংসিত হয়। ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে প্রবল বন্যা দেখা দিলে সংগঠনটি সেখানে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়া চট্টগ্রামে বন্যার্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহায়তা করে। ২০২৩ তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের সময় তুরস্কে শীতবস্ত্র পাঠায় সংস্থাটি। প্রতি বছর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানা স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে। সংস্থাটি সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে তিন লক্ষাধিক গাছ লাগিয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি নগদ অর্থ বা কাজ করার যন্ত্র কিনে দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং সারা দেশে কোরবানির গোশত বিতরণ করে থাকে।

বিশেষত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার শুরুতেই হঠাৎ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও ভারতের খুলে দেয়া বাঁধের পানিতে যখন তলিয়ে যায় ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালীর বিভিন্ন অঞ্চল। এ সময় সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। যা ইতোমধ্যে দেশের সব মহলে প্রশংসা ও বিস্ময়মাখা মুগ্ধতার জন্ম দিয়েছে। আস-সুন্নাহ ও এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহকে নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কসহ সব ধরনের মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা চলছে।

বন্যার প্রথম দিকে ২০ আগস্ট শুধু এক দিনেই ৩ লাখ মানুষ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়েছে। এক দিনে ২০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছেন তারা, এটা স্রেফ এক দিনের হিসাব। প্রতিদিন এই হিসাব বড়ই হচ্ছে। তাছাড়া ত্রাণসামগ্রী ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আরো গোছানো সব উদ্যোগ নিচ্ছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের হয়ে কাজ করছে এ দুর্যোগ মোকাবিলায়। শুধু মুসলমানরাই নয়, অন্য ধর্মের লোকেরাও অনুদান দিচ্ছেন, তারাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন। সবাইকে নিয়ে সামাজিক ভ্রাতৃত্ব জোরদার করার মোক্ষম সুযোগ তৈরি করেছে আস-সুন্নাহ। এ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির জানান, ‘দৈনিক সহস্রাধিক লোক স্বেচ্ছাসেবা দিচ্ছেন। যেখানে ৯ থেকে ৯০ বছরের লোক এমনকি প্রতিবন্ধী ও অন্য ধর্মীয় মানুষও অংশ নিয়েছেন।’

আস-সুন্নাহর চেয়ারম্যান হিসেবে সামনে থেকে সব কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। দৈনিক নয়া শতাব্দীকে তিনি বলেন, চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় তার ফাউন্ডেশন ১০০ কোটি টাকা ফান্ড তৈরির টার্গেট নির্ধারণ করেছে। যা চার স্তরে বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে। বন্যার প্রথম ধাক্কায় ২০ হাজার পরিবারকে শুকনো খাবার ও জরুরি সামগ্রী, দ্বিতীয় পর্বে ৫০ হাজার পরিবারকে ভারী খাবার অর্থাৎ যা রান্না করে খেতে হয় দেয়া হয়েছে, তৃতীয় পর্বে পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর যখন কর্ম থাকবে না তখন ৫০ হাজার প্যাকেট বিতরণ করা হবে যেখানে থাকবে ২০ কেজি করে চাল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারসামগ্রী এবং চতুর্থ পর্বে ৫ হাজার পরিবারকে চার বান্ডেল করে টিন ও নগদ অর্থ সহায়তা করা হবে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ১০ কোটি টাকার অর্থ সহায়তার লক্ষ্য নির্ধারণ করে ৫ কোটি টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ করেছে এবং বাকি টাকা বিতরণের কাজ চলমান রেখেছে।

আস-সুন্নাহকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে চান বা তার টার্গেট কী এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নয়া শতাব্দীকে তিনি বলেন, ‘ফাউন্ডেশনকে আমরা এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, সেখানে গেলে দেখতে পাব— কোনো বেকার নেই। নাগরিকরা প্রশিক্ষিত হবে। সবার কর্মের সংস্থান হবে। নাগরিকরা নানা রকম উদ্যোক্তা হবে। গোটা দেশ হবে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত। যুব সমাজ হবে মাদক ও নেশামুক্ত। এমন জায়গায় নিতে চাই, যেখানে মানুষ সুশিক্ষা পাবে। জাগতিক শিক্ষার পাশাপাশি ম্যুরাল শিক্ষা পাবে। ইসলামের মহান আদর্শ ধারণ করে ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য রোল মডেল হবে।

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক শিক্ষা, দাওয়াহ ও পূর্ণত মানবকল্যাণে নিবেদিত সেবামূলক সরকার-নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে শায়খ আহমাদুল্লাহ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। এ প্রতিষ্ঠান মানবতার শিক্ষক, মানুষের মুক্তি ও শান্তির দূত, মানবসেবার আদর্শ, মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আর্তমানবতার সেবা, সমাজ সংস্কার, মহত্তম নীতিচেতনার সঞ্চার, কর্মসংস্থান তৈরি, দারিদ্র্য বিমোচন, ইসলামী তমদ্দুনের প্রসার, বহুমুখী শিক্ষায়ন প্রকল্প পরিচালনা, ত্রাণ বিতরণ, স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, পরিচ্ছন্ন মানসিকতা গঠনে নিরন্তর নানা কর্মসূচি পালন, সর্বোপরি মৌখিক, লৈখিক ও আধুনিক সব প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষকে মহান আল্লাহর আনুগত্য ও তার রাসূলের অনুকরণে সত্য ও শান্তির পথে ডেকে এনে একটি আদর্শ কল্যাণ সমাজ বিনির্মাণে যথাশক্তি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম: আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রধানত তিনটি সেক্টরে কাজ করে— শিক্ষা, সেবা ও দাওয়াহ।

শিক্ষা কার্যক্রম: কোরআন-সুন্নাহর মৌলিক শিক্ষা সংবলিত আধুনিক যুগোপযোগী পাঠক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং মাদরাসা প্রতিষ্ঠা। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও নানা সামাজিক ও জীবনমুখী বিষয়ের ওপর প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন। উচ্চতর ইলমী গবেষণা কেন্দ্র। কর্মজীবী নর-নারীর জন্য বিভিন্ন মেয়াদি ইসলাম শিক্ষা কোর্সের আয়োজন। আস-সুন্নাহর চেতনাকে কেন্দ্রে রেখে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা। প্রাক-প্রাথমিক স্তরে বুনিয়াদি শিক্ষা বিস্তারে প্রভাতী মক্তব প্রতিষ্ঠা। অসচ্ছল পরিবারের শিশুদের বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রোধে পড়ালেখা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ জোগানো।

সেবা কার্যক্রম: বেকারত্ব দূরীকরণে ও দারিদ্র্য বিমোচনে হস্তশিল্প, যন্ত্রশিল্প, কারিগরি, খামার ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীলতার জন্য অর্থ সহায়তা প্রদান। সময়ে সময়ে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে উপদ্রুত অঞ্চলে ত্রাণ-সহায়তা প্রদান। রমজান মাসে অভাবগ্রস্তদের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ ও দাওয়াহ-এর আয়োজন। দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপলক্ষে ফিতরা, পোশাক ও ঈদসামগ্রী বিতরণ। সচ্ছলদের পক্ষ থেকে কোরবানির আয়োজন করে দুস্থদের মধ্যে বিতরণ। দুস্থদের মধ্যে রিকশা, সেলাই মেশিন ইত্যাদি উপার্জন উপকরণ বিতরণ। সুপেয় পানির সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় নলকূপ ও জলাধার স্থাপন। পরিবেশ সুরক্ষা ও স্বাবলম্বীকরণের লক্ষ্যে অভাবী পরিবার ও আবাসিক মাদরাসার আঙিনায় অধিক ফলনশীন বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা। শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য নানামুখী প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান। বিধবাদের ব্যয়ভার গ্রহণ ও এতিমদের পরিণত হয়ে ওঠা অবধি অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণপূর্বক শিক্ষাদান ও প্রতিপালন।

দাওয়াহ কার্যক্রম: শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর সমাজ গঠনে সহায়ক আদর্শ মসজিদ নির্মাণ ও পরিচালনা। বিষয় বিশেষে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ, মাদরাসা, জেলা অডিটরিয়াম, উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন, মাঠ প্রভৃতি সমাগমস্থলে সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিক ও উপলক্ষ্য-সাময়িক ওয়াজ মাহফিল, মুক্ত মতবিনিময় এবং আলোচনা সভা আয়োজন। বিশুদ্ধ ইসলামিক জ্ঞান, আকিদা, কর্মনীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে মৌলিক ও প্রামাণ্য বইপত্র প্রকাশ ও প্রচার। শিরক-বিদ’আত, প্রান্তিকতা ও উগ্রপন্থা নির্মূলে উদ্যোগ গ্রহণ। বিষয়ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠানের তথ্যচিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার। অমুসলিমদের উদ্দেশ্যে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও সৌন্দর্য তুলে ধরে বই রচনা, অনুবাদ, প্রকাশ ও প্রচার। ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণ ও অপসংস্কৃতি প্রতিরোধে নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ফ্যামিলি কাউন্সিলিং বিভাগ পরিচালনা। দীনি জিজ্ঞাসা ও পরামর্শের জন্য উন্মুক্ত ‘কল সেন্টার’ স্থাপন। মুসলিম ইয়ুথ ক্লাব প্রতিষ্ঠা। ইমাম ও খতিবদের জন্য দাওয়াহ প্রশিক্ষণ। শিশু-কিশোরদের ইসলামী সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ, পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং শরয়ী সমাধান বিভাগ।

তহবিল ও আয়ের উৎস: ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের দানের অর্থে ক্রীত সম্পত্তি ও তহবিল দিয়ে যাত্রা শুরু। সদস্য, সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের এককালীন ও নিয়মিত অনুদান। ফাউন্ডেশনের যে কোনো প্রকল্প থেকে অর্জিত অর্থ। জনসাধারণ কর্তৃক বিশেষ কোনো খাতে প্রদত্ত অনুদান। সচ্ছল মুসলিমদের প্রদেয় জাকাত, ফিতরা, ইফতার ও কোরবানিসহ বিশেষ বিশেষ খাতে উসুলকৃত অর্থ। সরকারি বা বেসরকারি উৎস থেকে প্রাপ্ত অনুদান ও অর্থ সহায়তা এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট পরিচালনা বাবদ সংশ্লিষ্ট প্রজেক্ট থেকে কর্তনকৃত ৫-১০% অ্যডমিনিস্ট্রেটিভ খরচ।

ব্যয়ের নীতিমালা: দাতারা যে খাতের জন্য দান করে থাকেন, সে খাতেই ব্যয় করা হয়। এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করা হয় না। জাকাত তহবিলে সংগৃহীত অর্থের শতভাগ হকদারদের মাঝে বণ্টন করা হয়। প্রতিটি প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পর আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। বছরে একবার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দ্বারা ফাউন্ডেশনের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষণ করা হয় এবং হিসাব-বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত টিমের তত্ত্বাবধানে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সব আর্থিক কার্যক্রম মনিটরিং করা হয়।

আস-সুন্নাহর অর্জনগুলো: একটি ইসলামী এনজিও হিসেবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন মাত্র অর্ধযুগ সময়ে যা অর্জন করেছে তা অসামান্য ও ঈর্ষণীয়। শিক্ষা, দাওয়াহ ও সেবা— এই তিন সেক্টরে ফাউন্ডেশনটি এ পর্যন্ত যতটুকু করতে পেরেছে তা অনেক এনজিওর জন্যও দীর্ঘদিনের দুঃসাধ্য অর্জন।

সেবা খাত: প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফাউন্ডেশন যেসব সেবামূলক কাজ করেছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ—

সবার জন্য কোরবানি: সচ্ছলদের পক্ষ থেকে ১,১৬৭টি গরু-ছাগল কোরবানি করে ১৬,১৯৩টি দুস্থ পরিবারের মাঝে গোশত বিতরণ করা হয়েছে।

করোনাকালীন সহায়তা: ১০০৩ জন উবার রাইডার এবং ৩০০ সিএনজি চালককে এক হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা করেছে। কোভিড-১৯-এ পুঁজি হারানো ৫০ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ১টি করে ভ্যান ও নগদ ৫ হাজার টাকা পুঁজি প্রদান করেছে এবং ১০০ নারীকে ব্লক-বাটিক প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৪ হাজার পরিবারের মধ্যে এক মাসের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে।

বন্যায় ত্রাণ বিতরণ: প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বন্যাকবলিত বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। এ প্রকল্পের আওতায় এ খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি ব্যাপক পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

ইফতার বিতরণ: দেশব্যাপী ১২০,৫৮৫ জন রোজাদারের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেছে।

শীতবস্ত্র বিতরণ: দেশব্যাপী ৩০,৯০৫ জন শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে।

খাদ্যসামগ্রী বিতরণ: দারিদ্র্যপীড়িত কয়েকটি জেলায় ১২৫০টি দুস্থ পরিবারের মাঝে ১২,৫০০ কেজি চাল বিতরণ করেছে।

নলকূপ স্থাপন: এ পর্যন্ত দেশজুড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ১১২টি নলকূপ স্থাপন করেছে।

এতিম ও বিধবা স্পন্সর: বিভিন্ন স্পন্সরের মাধ্যমে ৫০ জন এতিমের ভরণ-পোষণ এবং পড়াশোনাসহ যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

বৃক্ষরোপণ: পরিবেশ সুরক্ষা এবং স্বল্প আয়ের লোকদের স্বাবলম্বীকরণ ও সদাকায়ে জারিয়ার উদ্দেশ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আবাসিক মাদরাসা ও অভাবী মানুষের বাড়ির আঙিনায় অধিক ফলনশীল ২১৬,৪৯২টি বৃক্ষরোপণ করেছে। এছাড়া এ বছর অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহের সময় ১০ কোটি চারা রোপণের টার্গেট নির্ধারণ করে তিন লক্ষাধিক চারা রোপণ করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাকৃতিক ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য ৮০ হাজার নিমগাছ রোপণ কার্যক্রম চলমান রেখেছে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ