মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

স্থগিত হতে পারে এইচএসসি পরীক্ষা, আজ অটোপাস নিয়ে সিদ্ধান্ত

প্রকাশনার সময়: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৫

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো দিতে অনইচ্ছুক পরীক্ষার্থীরা। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে অটোপাস দেওয়ার দাবি তাদের। এ কারণে কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মোর্চা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডে দিনভর বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থীদেরও বিষয়টি প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

সোমবার দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। বিকালে মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়া নতুন সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ রুটিন বাতিল করতে বোর্ড চেয়ারম্যানকে মৌখিক নির্দেশনা দেন। এরপরই বোর্ড প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নতুন রুটিন বাতিল করার কথা জানান। আর অটোপাসের যে সিদ্ধান্ত সেটি প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিতে পারেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।

জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানের কিছু বিষয়ের পরীক্ষা সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে কিছু বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সংশোধিত নতুন সময়সূচি দিয়েও পরীক্ষা নিতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর স্থগিত পরীক্ষাগুলো নিতে আবারও সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। পুনর্বিন্যাসকৃত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো শুরু হওয়ার কথা। তবে আর পরীক্ষায় বসতে চান না শিক্ষার্থীরা।

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অটো পাস অথবা এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ফল তৈরির দাবি তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। এ নিয়ে নেমেছেন আন্দোলনেও। গত ১৫ আগস্ট নতুন সময়সূচি প্রকাশের পর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের অনেক সহপাঠী পরীক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন। তাছাড়া বিভিন্ন থানায় রাখা প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা আর বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশ নিতে চান না।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার বলেন, ‘আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল, তা শিক্ষা সচিব বাতিলের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। তার মানে রুটিন বাতিল করা হবে।’

অটোপাস দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার এখতিয়ারে নেই। প্রধান উপদেষ্টা তোমাদের এ বিষয়টি জেনেছেন। প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, সচিব স্যাররা মিটিং করবেন। সেখান থেকে তোমাদের বিষয়টি নিয়ে ঘোষণা দিতে চান তারা। শুধু রুটিন বাতিল নয়। তোমাদের আরও যেসব দাবিগুলো আছে, সেগুলোও লিখে আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। যতদূর জেনেছি, সিদ্ধান্ত তোমাদের অনুকূলে আসবে।’

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

সূচি অনুযায়ী এখনো ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ বাকি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ