পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধানের প্রতিবেদন দুদকের কমিটি জমা দিয়েছে।
রোববার (২৮ জুলাই) এফিডেভিড আকারে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে ৪২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৯ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেনজীর আহমেদের নামে মোট ৯ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৫ টাকা মূল্যের, তার স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে মোট ২১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৩ টাকা মূল্যের, জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে মোট ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৬ টাকা মূল্যের এবং মেজো কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে মোট ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে, স্থাবর সম্পদের দলিলে প্রদর্শিত মূল্য এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করা গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মূল্য আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান।
রোববার (২৮ জুলাই) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের দ্বৈত বেঞ্চে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয় দুদক।
খুরশিদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানকারী দল খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি দেশের বাইরে আরও কিছু রয়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ২৩ এপ্রিল সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে দুদককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধানের অগ্রগতির দুই মাস পর হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেন।
পরে গত ২৩ মে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ২৭টি ব্যাংকের ৩৩টি আকাউন্ট জব্দের (ক্রোক) নির্দেশ দেন। এরপর ২৬ মে একই আদালত বেনজীর ও তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানের আরও ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দেরও নির্দেশ দেন।
গত ২৫ এপ্রিল দুদক বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে চিঠি দেয়। এ ছাড়া এফডিআর, সঞ্চয়পত্রসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে জয়েন্ট স্টক, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরেও চিঠি দেওয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে থাকা বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও) স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ