কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় সাঁড়াশি অভিযান চলছে। নাশকতার স্পটের আশপাশ এলাকাসহ অলিগলি, এমনকি বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে পুলিশ। সন্দেহ হলে মোবাইল ফোন যাচাই করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড বা নাশকতায় সম্পৃক্ততার কোনো আলামত পেলেই আটক করা হচ্ছে।
এছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরা, ভিডিও ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেও চিহ্নিত করা হচ্ছে নাশকতাকারীদের। র্যাব-ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এ কাজে তৎপর রয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২ হাজার ৭৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, নাশকতার ঘটনায় ঢাকায় এ পর্যন্ত ৩৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১ হাজার ১১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও অন্তত ১২১টি মামলায় ১ হাজার ৬৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগ বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মী। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাইফুল আলম নিরব, রফিকুল আলম মজনু ও সাবেক এমপি এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত। এছাড়া রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাহীন শ্রমজীবী সাধারণ মানুষকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে চলমান অভিযানে নিরপরাধ লোকজনকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির দাবি, ঢালাওভাবে দলটির নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, হত্যা-নাশকতায় জড়িত ছিল না, এমন কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। সন্দেহভাজন হিসেবে আটকদের যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্টতা না পেলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানো বেশির ভাগই বাইরে থেকে এসেছিল। তারা কিছুদিন আগে এসে বিভিন্ন এলাকার বাসা ও মেসে ওঠে। পরে একটি মহলের নির্দেশনা অনুযায়ী সুযোগ বুঝে নাশকতা চালায়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, যারা হত্যা-নাশকতায় জড়িত ছিল না, এমন কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি ছিল বলেই দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তারা এরই মধ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছে।
ঢাকার বাইরেও গ্রেপ্তারদের মধ্যে অধিকাংশ বিএনপি-জামাতের সদস্য বলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যুরো, অফিস ও প্রতিনিধিদের জানান নিজ নিজ জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা।
নয়াশাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ