এবার নিষিদ্ধ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্র রাজনীতি। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা একযোগে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ নিয়ে ঢাবিতে মেয়েদের পাঁচটি হলেই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ঢাবির মেয়েদের পাঁচ হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হল থেকে বের করে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে এসব হলের প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে ‘হল রাজনীতিমুক্ত’—নামে হলের প্যাডে লিখিত মুচলেকা নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ছেলেদের হলেও ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর ও তাদের বের করে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ছাত্রলীগমুক্ত ঢাবির মেয়েদের পাঁচটি হল হলো- বেগম রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল, কবি সুফিয়া কামাল হল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল।
এ দিকে মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে জড়ো হন ছাত্ররা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্রলীগ ও রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা সংবলিত স্বাক্ষর নেন হল প্রাধ্যক্ষের।
অঙ্গীকারনামায় বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ কুলেত-মৈত্রী হলের সাধারণ শিক্ষার্থী এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ ১৭-৭-২০২৪ থেকে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছত্রলীগ ছাত্রদল, যুবদল, ছাত্রফ্রন্ট, জামাত-শিবির) নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল গণরুম বা পলিটিক্যাল রুম থাকবে না। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হবে না৷ কোনো ধরনের পলিটিক্যাল সম্পৃক্ততা হলের সাথে থাকবে না। আমরা হলের মেয়েরা যদি এইসব দলের দ্বারা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে এই দায় প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে নিতে হবে।
পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পাঁচটি নির্দেশনা প্রদান করে বিজ্ঞপ্তি দেয় হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম। নির্দেশনাগুলো হল: শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে স্থায়ীভাবে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো; কোনো বহিরাগত হলে অবস্থান করতে পারবে না; শিক্ষার্থী কোনো প্রকার ক্ষতির (শারীরিক ও মৌখিক) সম্মুখীন হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; প্রশাসনিকভাবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট বণ্টনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং হলের সব ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে, রাত ৩টার দিকে এ হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল শাখা ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের হল থেকে বের করে দেন এবং তাদের কক্ষ ভাঙচুর করেন। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হল গেটে এসে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান।
এ দিকে আজ ভোর থেকে ‘আমার ভাই নিহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগান দিতে শুরু করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ মাহবুবুর রহমানের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা।
এ দিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ