ঢাকা, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬

মিছিল-স্লোগানে ‘উত্তাল’ রাজপথ

প্রকাশনার সময়: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৮:১২ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৬

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল এবং ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। গতকাল সোমবারও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়, চাঁনখারপুল, ইন্টার কন্টিনেন্টাল মোড়, পল্টন মোড়, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, ফার্মগেটে ‘বাংলা ব্লকেড’ বাস্তবায়ন করছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারী কলেজ ও সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টসহ সচিবালয় এলাকা দখলে নেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় এসব সড়কের যান চলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। শিক্ষার্থীদের মতো এ ঘটনার দ্রুত সমাধান চান সাধারণ নগরবাসীও। তবে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে অবরোধ তুলে নেয়ার পর শাহবাগ মোড় দিয়ে আবার যান চলাচল শুরু হয়েছে। অবরোধ প্রত্যাহারের আগে আজ মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি চলমান ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘটের কর্মসূচী চলবে। তবে পরদিন বুধবার আবারও অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচীর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। আজ সংবাদ সম্মেলনে সেই কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রাতে জরুরী বৈঠকে বসেন পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। কিন্তু সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, গতকাল বেলা ৩টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও মোড়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১২, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করেন। এরপর কোটাবিরোধী স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে রাজপথ। নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ফলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম নেয়নি। পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপরের নির্দেশে তারা নিরাপদ অবস্থানে থেকে ছাত্রদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পরে তারা বিভিন্ন স্থান থেকে অবরোধ তুলে নেন। আজ মঙ্গলবার আবারও অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এদিকে গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যানজট ছিল। দুপুরের পর থেকে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করলে যানজট আরও বাড়ে। এরপর বিকাল ৪টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ শাহবাগ মোড়, পাশের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় ও হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠানামার চাঁনখারপুল মোড় অবরোধ করেন। এর সঙ্গে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে অবরোধ চলতে থাকায় আজিমপুর-নিউমার্কেট থেকে মিরপুর ও গাবতলীর পথে চলাচলের সড়কটি দিয়েও যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন ইডেন কলেজের ছাত্রীরা, আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, শাহবাগ, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, আগারগাঁও, মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকা, নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাবসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাতে তারা অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। তবে যানজটে দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে থেকে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শাহবাগ-ফার্মগেট অবরোধ: সরকারি চাকরিতে সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিলের দাবীতে রাজধানীর শাহবাগ, কারওয়ানবাজার হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিট থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মোড় অবরোধ শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা প্রথমে শাহবাগে অবস্থান নেন। সেখান থেকে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর মোড়, কারওয়ানবাজার মোড়, মৎস্য ভবন, ফার্মগেট মোড় অবরোধ করেছেন তারা। রাতে শাহবাগ ছাড়া সব স্থান থেকে অবরোধ তুলে নেয়া হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা পদ্ধতি সংশোধনের দাবীতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছে ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রধান গেট থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে গিয়ে ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবীতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকেল ৩টায় মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন তারা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা মহাসড়ক থেকে সরে যান।

ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা সংস্কারের দাবীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকা থেকে আসা জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে আটকে দেন তারা। পরে বিকাল সোয়া ৩টায় অবরোধ তুলে নেয়া হলে ট্রেনটি তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন সংলগ্ন মুক্তমঞ্চের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখান থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা।

ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবীতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় তারা রেলপথটি অবরোধ করলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

চবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবীতে রেলপথ অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস আটকা পড়ে। আধা ঘণ্টা পর রেলপথ অবরোধ তুলে নিলে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। সোমবার বিকাল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম ষোলশহর রেলস্টেশন অবরোধ করেন তারা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বেলা আড়াইটার দিকে শাটলে চড়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে ষোলশহর রেলস্টেশনে পৌঁছান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রেলপথ অবরোধের বিষয়ে ষোলশহর স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেছেন। এ কারণে ট্রেন আটকে যায়। শিক্ষার্থীদের তারা বুঝিয়েছেন যাতে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়া হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘বাংলা ব্লকেড’: কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত এক দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ী বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থান নিয়ে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন। এ আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্বদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ: ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার রংপুর নগরের মডার্ন মোড়ে তারা দুপুর ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ: সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবীতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের চরপাথালিয়া এলাকা হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ: সরকারী চাকরীতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবীতে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। তৃতীয় দিনের মতো সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা। এতে করে সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

মহাসড়ক অবরোধ ইবি শিক্ষার্থীদের: কোটা সংস্কারের দাবীতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন জনসাধারণ। এ সময় শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ৩টা থেকে বেলা ৬টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন যাওয়ার সুযোগ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি: সরকারী চাকরীতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৬৫ সদস্যের একটি সমন্বয়ক কমিটি করেছেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে এই কমিটি কাজ করবে। গতকাল সোমবার দুপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে ও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে আন্দোলন সফল করার জন্য সারা দেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়। কমিটিতে সমন্বয়ক হিসেবে ২৩ জনের নাম রয়েছে। অন্যরা সহসমন্বয়ক। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিনিধিদের এখানে নাম আছে।

কোটা আন্দোলন সমন্বয়কারীর বাবাকে হুমকি: কোটাবিরোধী আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়কের বাবার মুঠোফোনে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। মুঠোফোনে হুমকিদাতা বলেছেন, ‘আপনার ছেলে কোটা আন্দোলন থেকে সরে না দাঁড়ালে তার লাশ পাবেন।’ কোটাবিরোধী আন্দোলনের ওই সমন্বয়কারীর নাম খান তালাত মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। শুরু থেকেই তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ