ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

ছাত্রত্বের ‘আকাল’ ছাত্রদলে

প্রকাশনার সময়: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৩

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ২৬০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণার পর শুরু হয়েছে নানা ধরনের সমালোচনা। অভিযোগ রয়েছে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে আন্দোলনে নিষ্ক্রিয়, অছাত্র, বিতর্কিত এবং সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরীরতদের টাকার বিনিময়ে পদ দেয়া হয়েছে। এতে স্বয়ং ক্ষুব্ধ সংগঠনটির সুপার সেভেনের নেতারাও। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অভিযোগ রয়েছে চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় পদ দেয়া হয়নি ঢাকার বাইরের জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্যাগী কর্মীদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কমিটিতে থাকা প্রায় শতভাগ নেতাই পড়াশোনায় অনিয়মিত। কারো ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে এক যুগ আগে, কারো অর্ধ যুগ আগে। এ নিয়ে ছাত্রদলের মাঠ পর্যায়ে চরম হতাশা বিরাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রমতে, গত ১৫ জুন ২৬০ সদস্যের ছাত্রদলের ‘আংশিক পূর্ণাঙ্গ’ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২৬০টি ক্রম থাকলেও কমিটিতে তিনটি পদ ফাঁকা রয়েছে। অর্থাৎ মূলত ২৫৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগের সাত নেতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কমিটিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ২৫০টি নাম। এর আগে ১ মার্চ ছাত্রদলের সাত সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সভাপতি ও নাছির উদ্দীন নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, শ্যামল মালুমকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আমানউল্লাহ আমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, মো. জাহাঙ্গীর আলমকে দপ্তর সম্পাদক এবং শরিফ প্রধান শুভকে প্রচার সম্পাদক করা হয়।

সূত্রমতে, হাওয়া ভবনের সাবেক কর্মকর্তা বিএনপির বর্তমান ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল সংগঠনটিতে একক আধিপত্য বিস্তার করছেন। তিনি তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ তার বিরোধিতা করার সাহস দেখান না। দলীয় পদ প্রত্যাশীরা মূল্যায়নের আশায় সবচেয়ে বেশী ছুটছেন হাওয়া ভবনের সাবেক এ কর্মকর্তার পেছনেই। কারণ বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা বকুল দেশে থাকা নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রভাবশালী। তার আধিপত্য ধরে রাখতে নিজের পছন্দের লোকজনকে পদে বসিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ে ছাত্রদলের পূর্বের কমিটি ভেঙে দিয়ে রাকিবকে সভাপতি ও নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। আন্দোলন সংগ্রামে যারা মাঠে ছিলেন তাদের বাইরে কাউকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদায়ন করা হবে না এমনটি বলেছিলেন সংগঠনটির নেতারা। কিন্তু আন্দোলনে ছিলেন এমন অনেক প্রার্থীদের কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। এমনকি কমিটিতে প্রটোকলের বিষয়ে বারবার বলা হলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খুরশিদ আলম সোহেলকে ৭ নম্বর সহসভাপতি করা হলেও কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহসভাপতিকে সোহেলের ওপরে পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া গত কমিটির ১ নম্বর সদস্যকে যোগাযোগ সম্পাদক করা হলেও ৩ নম্বর সদস্যকে করা হয়েছে যুগ্ম সম্পাদক। এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সংগঠনটির।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের সুপার সেভেনের এক নেতা বলেন, ২৬০ সদস্যের যে আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া হয়েছে এদের মধ্যে চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় মাঠে সক্রিয় ছিলেন এমন ১২০ জনও পাওয়া যাবে না। টাকার বিনিময়ে অনেককে পদে আনা হয়েছে। অথচ যারা নিজেদের জীবন বাজী রেখে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে মাঠে ছিলেন এমন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জনকে বাদ দেয়া হয়েছে। কমিটি গঠনের আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত সুপার ফাইভকে জানানো হয়েছে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী পাঁচ জনের কাছে বায়োডাটা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিটি দেয়া হয়েছে ২৬০ সদস্যের। তাহলে ১০১ সদস্যের কমিটির কথা বলে কেন বায়োডাটা নেয়া হলো। এমন প্রশ্ন করছেন সুপার সেভেনের বাকী নেতারা।

তিনি আরো জানান, প্রথমে সুপার সেভেনের কমিটি ঘোষণা করা হলেও সংগঠনের প্রায় সিদ্ধান্ত সভপতি ও সম্পাদক নিয়ে থাকেন। আগের কমিটির শীর্ষ নেতারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার আগে সুপার ফাইভ বা শীর্ষ নেতারা আলোচনা করত। কিন্তু এ কমিটি ঘোষণার আগে সভাপতি ও সম্পাদক ছাড়া কমিটির বিষয়ে কাউকে জানানো হয়নি। এমনকি ১০১ সদস্যের কমিটির কথা বলে ২৬০ সদস্যের কমিটি দিয়ে সভাপতি ও সম্পাদক প্রতারণা করেছে। সভাপতি ও সম্পাদকের বাইরে বাকী পাঁচ জনের মাত্র ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীকে ২৬০ সদস্যের কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে।

ঘোষিত ছাত্রদলের কমিটিতে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে গত ২৭ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতারা। তা গ্রহণ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এর আগে গত ২৫ জুন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এত নেতাকর্মী ও পথচারী সহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। যদিও এর দায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের ওপর চাপানো হয়েছে। তবে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জানান, অর্থের বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর রাজপথে থাকা অসংখ্য ছাত্রনেতাকে বাদ দিয়েছে রাকিব-নাছির কমিটি। পরিকল্পিতভাবে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ককটেল মেরে সেটি পদবঞ্চিতদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন সংগ্রামে চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।

অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রদলে বিভিন্ন বলয় রয়েছে। সাধারণত বলয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়ে থাকে। বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্দিষ্ট দু’টি বলয় থেকে নেতা হয়েছেন। তাই তাঁরা অন্য বলয়গুলোর অনুসারীদের কমিটিতে অবমূল্যায়ন করেছেন। অনেককে কমিটিতে রাখাই হয়নি।

সদ্য বিলুপ্ত ঢাকা মহানগর পূর্বের শীর্ষ এক নেতা বলেন, মহানগর পূর্বের একটি ওয়ার্ডে পদ পাওয়ার জন্য যেই ব্যক্তি আমার পেছনে দিনের পর দিন দৌড়ঝাঁপ করেছেন, কিন্তু তাকে কোনো পদে রাখা হয়নি। সেই ব্যক্তিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট না থাকার কারণে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটি জায়গা হয়নি আশরাফুল ইসলাম রবিনের। সার্টিফিকেট না থাকার কারণে প্রথমে মহানগর পরে শ্রাবণ-জুয়েল কমিটিতেও জায়গা হয়নি। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক নাছিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাকে কেন্দ্রীয় পদে পদায়ন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে- ৩২ নম্বর সহ-সভাপতি জুয়েল মৃধার এসএসসি ১৯৯৮-৯৯ সেশন। অনেক আগেই তিনি ছাত্রত্ব শেষ করেছেন, কিন্তু তাকে এ কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। বলা হচ্ছে শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে তাকে কেন্দ্রীয় পদে পদায়ন করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাইন নাহিয়ান সজিবকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়েছে। যদিও এটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা স্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, সজিব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ ক্যাম্পাসে সংগঠনটির কোনো কমিটি নেই।

অভিযোগ রয়েছে, একটি বেসরকারী ব্যাংকে চাকরী করছেন ছাত্রদলের ১০৪ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া। তিনি চকবাজার পুরান ঢাকার জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বলা হচ্ছে তিনি একজন চাকরীজীবী হয়েও শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এবং টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলে পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রদলে এর আগে কোনো পদ না থাকার পরও রাশেদুজ্জামান তুফানকে ১৬১ নম্বর সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়েছে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছিরের বন্ধু বলে তাকে পদায়ন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ১৮৬ নম্বর সহ-সাধারণ সম্পাদক মির্জা মারুফ গুলশান- ২ শাখার ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরী করেন। শেরে বাংলা নগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যকে ২৩৬ নম্বর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলা ছাত্রদলের ৩ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ককে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ১৩১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়েছে। পূর্বে কোনো পদ না থাকার পরও অর্থের বিনিময়ে ২১৩ নম্বর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। দারাজ কোম্পানীতে চাকরী করছেন, কিন্তু অর্থের বিনিময়ে ২৩৭ নম্বর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত, কিন্তু অর্থের বিনিময়ে পদ দেয়া হয়েছে। কারওয়ান বাজারে তরকারী ও মশলা ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম দিপু পাটোয়ারী। পূর্বে কোনো পদ না থাকার পরও উর্মি আক্তার ভূইয়াকে ২২৬ নম্বর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। গোপালগঞ্জে ঠিকাদার ব্যবসা করেন তৌহিদুর রহমান তাজ, কিন্তু ছাত্রদলে ১৫২ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কেন্দ্রে পূর্বে কোনো পদ না থাকার পরও সায়মা চাকমাকে ১৫৩ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে অতি মূল্যায়ন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরী করেও কেন্দ্রীয় পদ পেয়েছেন জুয়েল রানা। রাজপথে না থাকার পরও ১১৩ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে তানজিয়া আফরিন এলিনাকে। ছাত্রত্ব থেকে আরো পাঁচ বছর পূর্বে বিদায় নিলেও সাধারণ সম্পাদকের বাইক চালায় বলে ১২৬ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়েছে ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরীকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও থাকার পরও শেখ শাহনাজ পারভীনকে ১৭৬ নম্বর সহ-সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ঢাকা মহানগরের রাজনীতি করলেও কোনো পদ পদবী না থাকার পরও জুবাইদা ইসলাম জেরিনকে ১৭৮ নম্বর সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়। রাজনীতিতে এক বছর ধরে যুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় সংসদের ২২৮ নম্বর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন আসমা আক্তার নিপা। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি সহ-সভাপতি রাকিব উদ্দিন রুমেল চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় মাঠে ছিলেন না। কিন্তু তাকে কেন্দ্রীয় পদে পদায়ন করা হয়। ঢাকা মহানগর পূর্ব রাজনীতি করলেও কোনো পদ পদবী না থাকার পরও সাদিকা তামান্না রেমিকে পদায়ন করা হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের বেতনভুক্ত কর্মচারী মুস্তাসিম বিল্লা অপুকে কেন্দ্রীয় পদে পদায়ন করা হয়েছে।

ছাত্রদলের আংশিক কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে নামমাত্র দুই চার জনকে পদায়ন করা হয়। এমনকি এ কমিটিতে জায়গা পাননি বুয়েট, চুয়েট, মেডিকেল, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে জেলা মহানগরের নেতাকর্মীরা। কমিটিতে শুধু সভাপতি, সিনিয়র ও সহ-সভাপতি পদে ৪২ জন আসীন হয়েছেন। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীর্ষ পদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন, ঢাকা কলেজের ১ জন, ইডেন মহিলা কলেজের ১ জন এবং প্রাইভেট থেকে ১ জনকে পদ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দলের ভিতর-বাহির চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে এ সংগঠনটির শীর্ষ পদ মেলে না, এমন অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল মন্তব্য।

জানা গেছে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানকে। যা দলের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। মূলত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির দায়ে তাকে সরানো হয়। কিন্তু বকুল ছাত্রদলের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্বে থাকার পরও এ সংগঠনটি সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলন সফলে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।

শুধু ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল নয়, বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চট্টগ্রাম বিভাগের নতুন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেলও আছেন প্রভাবশালী এ বলয়ে।

সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের ২৬০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের পরই সবচেয়ে বেশী আধিপত্য বিস্তার করেছে যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। অভিযোগ আছে, বকুল ঘনিষ্ঠ নয়নের পছন্দে অনেককেই ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছে। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। এটা আগে জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর আমি বিস্মিত হয়েছি। তিনি আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি করতেন এজন্য তাকে পদায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এ বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ